মাথা ব্যথা, শিরশূল, অর্ধেক মাথাব্যথা - Headache, Migraine
মাথা ব্যথা অনেক রকমের আছে, এলোপ্যাথিক ডাক্তাররা এদের অনেক রকমের সুন্দর সুন্দর 2017 Thu (migraine, hemicrania, histamine headache, sick headache, sinus headache, tension headache, cluster
headache, school girl headache)। কিন্তু হোমিওপ্যাথিতে নাম দিয়ে কাম নাই। লক্ষণ এবং কারণ অনুযায়ী ঔষধ নির্বাচন করতে হবে। Melilotus Alba : মাথাব্যথার এক নাম্বার ঔষধ হলো Melilotus Alba (শক্তি ৩,৬,১২,৩০,২০০) বিশেষত যখন
মাথায় অতিরিক্ত রক্ত সঞ্চয়ের (congestion) কারণে মুখ জ্বলজ্বলে লাল রঙ ধারণ করে এবং গলার দুপাশের রক্তবাহী ধমনী দপদপ করতে থাকে। Lycopodium : মাথাধরার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দুইটি ঔষধ হলো Lycopodium এবং Silicea । যদি মাথা ঢেকে
রাখলে ভালো লাগে তবে Silicea (শক্তি ৩,৬,১২,৩০,২০০) খান আর যদি মাথা খোঁলা রাখলে আরাম লাগে তবে Lycopodium (শক্তি ৩,৬,১২,৩০,২০০) দশ/বিশ মিনিট পরপর খেতে থাকুন। Glonoine : দীর্ঘক্ষণ রৌদ্রে থাকার কারণে অথবা গরমে থাকার কারণে
কিংবা হাই পাওয়ারের ভালবের নীচে কাজ করার কারণে মাথাধরায় Glonoine (শক্তি ৩,৬,১২,৩০,200) কিছুক্ষণ পরপর খেতে থাকুন। Belledonna : যে-কোন ধরনের মাথাব্যথাই হোক না কেন, Melilotus Alba এবং Belledonna ঔষধ দুটি একত্রে মিশিয়ে
খেতে থাকুন নিশ্চিত যাবে। Ruta Graveolans : চোখের অতিরিক্ত ব্যবহারের কারণে মাথাধরায় Ruta Graveolans (শক্তি ৩,৬,১২,৩০) খান। Ipecac : মাথাব্যথার সাথে বমিবমি ভাব থাকলে Ipecac (শক্তি ৩,৬,১২,৩০) অব্যর্থ। Coffea Cruda :
দুঃশ্চিন-া বা মানসিক উত্তেজনার কারণে মাথা ব্যথায় Coffea Cruda (শক্তি ৩,৬,১২,৩০) খান। Tabacum : ধূমপানের কারণে মাথাব্যথা হলে Tabacum অথবা China খেতে পারেন।
মাথা ব্যথার সাথে ঘুমঘুম ভাব থাকলে ষ্ট্রিকনিন, নেট্রাম সালফ, জেলসিমিয়াম, নাক্স মস্কেটা প্রযোজ্য। Belladonna : যেকোনো তীব্র ব্যথা যতক্ষণই থাকুক না কেন, যদি হঠাৎ আসে এবং হঠাৎ চলে যায়, তবে বেলেডোনা ঔষধটি খেতে থাকুন। Ignatia Amara : দুঃসংবাদ
শোনার পরে অথবা বিরহ-বিচ্ছেদ-ছ্যাকা খাওয়ার কারণে, মনে কষ্ট পাওয়ার কারণে মাথা ব্যথা হলে ইগ্নেশিয়া খেতে হবে । Chamomilla : যদি মাথা ব্যথা বা অন্য কোন ব্যথার তীব্রতায় কোন রোগী দিগ্বিদিক জ্ঞানশূণ্য হয়ে পড়ে, তার ভদ্রতাজ্ঞানও লোপ পেয়ে যায়, সে ডাক্তার বা
নার্সকে পর্যন্ত গালাগালি দিতে থাকে; তবে তাকে ক্যামোমিলা খাওয়াতে হবে। ক্যামোমিলা হলো অভদ্র রোগীদের ঔষধ। শিক্ষকদের হাতে শিশুরা মার খাওয়ার ফলে এবং কোন কারণে ভীষণ রেগে যাওয়ার ফলে পেট ব্যথা শুরু হলে ক্যামোমিলা খাওয়াতে হবে। যারা ব্যথা একদম সহ্য
করতে পারে , ক্যামোমিলা হলো তাদের ঔষধ। ব্যথার সময় গাল গরম হয়ে যায়, মুখ লাল হয়ে যায় এবং ঘামতে থাকে।
China Officinalis : ব্যথা যদি নির্দিষ্ট সময় পরপর একেবারে ঘড়ির কাটা কাটায় আসে, তবে তাতে চায়না প্রযোজ্য। পেটে প্রচুর গ্যাস হয় । Magnesia Phosphorica : বিজলীর মতো মাথা ব্যথা, একবার আসে একবার যায়। ব্যথা চাপ দিলে এবং গরম শেক দিলে
কমে। ঠান্ডা বাতাসে বা ঠান্ডা পানি লাগলে ব্যথা বৃদ্ধি পায়। ম্যাগ ফস স্নায়বিক ব্যথার এক নম্বর ঔষধ। ইহার ব্যথা অধিকাংশ ক্ষেত্রে ছুড়ি মারা অখবা চিড়িক মারা ধরণের মারাত্মক ব্যথা। আক্রান্ত অঙ্গকে মনে হবে কেউ যেন লোহার হাত দিয়ে চেপে ধরেছে। Pulsatilla :
গুরুপাক খাবার অর্থাৎ তেল-চর্বি জাতীয় খাবার খাওয়ার কারণে মাথা ব্যথা হলে পালসেটিলা খাওয়াতে হবে। Bryonia Alba : মাথা ব্যথা, জয়েন্টের ব্যথা, হাড়ের ব্যথা, মাংশের ব্যথা, বুকের ব্যথা, বাতের ব্যথা প্রভৃতিতে ব্রায়োনিয়া সেবন করতে পারেন যদি সেই ব্যথা নড়াচড়া
করলে বেড়ে যায়। ব্রায়োনিয়ার লক্ষণ হলো আক্রান্ত অঙ্গ যত বেশী নড়াচড়া করবে, ব্যথা তত বেশী বৃদ্ধি পেতে থাকে। Chamomilla : যদি ব্যথার তীব্রতায় কোন রোগী দিগ্বিদিক জ্ঞানশূণ্য হয়ে পড়ে, তার জ্ঞানও লোপ পেয়ে যায়, সে ডাক্তার বা নার্সকে পযর্ন্ত গালাগালি দিতে
থাকে তবে তাকে ক্যামোমিলা খাওয়াতে হবে। ক্যামোমিলা হলে অভদ্র রোগীদের ঔষধ। Colchicum Autumnale : কলচিকামের প্রধান লক্ষণ হলো খাবারের গন্ধে বমি আসে এবং আক্রান্ত অঙের জোর/শক্তি কমে যায়। Kali Bichromicum : ক্যালি বাইক্রোম
প্রধান লক্ষণ হলো ব্যথা আঙুলের মাথার মতো খুবই অল্প জায়গায় হয়ে থাকে, ব্যথা ঘন ঘন জায়গা বদল করে, কফ-থুতু-নাকের শ্লেম্মা খুবই আঠালো হয় এবং টানলে রশির মতো লম্বা হয়ে যায় ইত্যাদি ইত্যাদি। Pulsatilla Pratensis : পলিসেটিলা’র ব্যথার প্রধান লক্ষণ
হলো ব্যথা ঘনঘন স্থান পরিবর্তন করে। আজ এক জায়গায় তো কাল অন্য জায়গায় কিংবা সকালে এক জায়গায় তো বিকালে অন্য জায়গায়। Lac Cabinum : ল্যাক ক্যান-এর ব্যথার প্রধান লক্ষণ হলো ব্যথা ঘনঘন সাইড পার্শ্ব পরিবর্তন করে। আজ ডান পাশে তো কাল বাম
পাশে কিংবা সকালে সামনের দিকে তো বিকালে পেছনের দিকে। Spigelia Anthelmia : স্পাইজেলিয়া মাথা ব্যথার শ্রেষ্ট ঔষধগুলির একটি। মাথার বাম দিকের ব্যথায় এটি ভালো কাজ করে।
তার মানে এই নয় যে, ডানদিকের ব্যথায় বা সামনে-পেছনের-উপরের ব্যথায় কাজ করবে না। ব্যথা সাধারণত খুবই মারাত্মক হয়ে থাকে। চেপে ধরার মতো, ছুড়ি মারার মতো, সুই ফোটানোর মতো, জ্বালাপোড়া থাকতে পারে, ছিড়ে ফেলার মতো। মাথা ব্যথার সাথে সাথে চোখ, মুখ,
দাত এবং হৃদপিন্ডের ব্যথাতেও এটি একটি সেরা ঔষধ।এই ঔষধের দুইটি অদ্ভুত লক্ষণ হইল ব্যথার সাথে ডায়েরিয়া শুরু হয় এবং আলপিন বা এই রকম চৌকো/সূচালো জিনিসকে ভয় পায় (fear of pointed things as pins) । ব্যথা নীচের থেকে উপরের দিকে
যায়। এটি গলগন্ডের (exophthalmic goitre) একটি শ্রেষ্ট ঔষধ। এটি কৃমিরও সমস্যা এবং বাতের সমস্যাতেও এটি দারুণ কাজ করে। দুর্গন্ধযুক্ত নিঃশ্বাস এবং দুর্গন্ধযুক্ত বায়ু ত্যাগ করা স্পাইজেলিয়া দুইটি বড় লক্ষণ।স্পাইজেলিয়াকে বলা হয় সূর্য মার্কা ঔষধ
(sun remedy); কারণ ইহার রোগ সূর্য ওঠলে শুরু হয় এবং সূর্য যত উপরে উঠতে থাকে রোগের মাত্রা তত বাড়তে থাকে, তারপর সূর্য যত নীচে নামতে থাকে, রোগের মাত্রা তত কমতে থাকে।
সূর্য মার্কা আরেকটি ঔষধ হলো নেট্রাম মিউর (Natrum Muriaticum) । স্পাইজেলিয়া মূলত হৃদরোগের ঔষধ। এটি তেতিলামিরও (Stammering) একটি প্রধান ঔষধ যারা প্রথম শব্দটি তিন বা চার বার উচ্চারণ করে। সে যাক, ওপরের প্রধান প্রধান লক্ষণগুলো থাকলে
যে-কোন রোগে স্পাইজেলিয়া খাওয়াতে পারেন। Bacillinum : মাইগ্রেন বা এই জাতীয় মারাত্মক মাথা ব্যথার একটি মূল কারণ হলো বিসিজি টিকা ()। যদি রোগীর যক্ষা বা হাঁপানি রোগের পারিবারিক / বংশগত ইতিহাস থাকে অথবা ঘনঘন সর্দি-কাশি হওয়ার অভ্যাস থাকে
অথবা বিসিজি টিকা নিয়ে থাকেন, তবে ব্যাসিলিনাম ১০০০ শক্তিতে (Bacillinum 1M) এক মাত্রা (অর্থাৎ এক ফোটা বা দশটি বড়ি) ঔষধ খান, তার তিন মাস বিরতির পরে ব্যাসিলিনাম ১০,০০০ শক্তিতে (Bacillinum 10M) এক মাত্রা (অর্থাৎ এক ফোটা বা দশটি বড়ি)
ঔষধ খান এবং তারও তিন মাস বিরতির পরে ব্যাসিলিনাম ৫০,০০০ শক্তিতে (Bacillinum 50M) এক মাত্রা (অর্থাৎ এক ফোটা বা দশটি বড়ি) ঔষধ খান। Thuja Occidentalis : টিকা বিসিজি, ডিপিটি, এটিএস, পোলিও, হেপাটাইটিস, এটিএস ইত্যাদি) নেওয়ার
কারণে ব্যথা হলে খুজা খেতে হবে। শতকরা ৯৯ ভাগ মাথা ব্যথার কারণ টিকা (Vaccine)। কাজেই যারা অতীতে বিভিন্ন রকমের টিকা নিয়েছেন, তাদেরকে অবশ্যই উচ্চ শক্তিতে দুই |
তিন মাত্রা থুজা খাওয়া উচিত। যারা টিকা নেন নাই, তাদেরও থুজা খাওয়া উচিত। আপনি না নিলেও হয়ত আপনার পিতা-মাতা অথবা ছেলে-মেয়ে-নাতি-নাতনীরা নিয়েছে। কারণ টিকার ক্ষতি কয়েক জেনারেশন পর্যন্ত চলে যায়। টিকা নেওয়ার কারণে শরীরের বিভিন্ন স্থানে চিড়িক
মারা ব্যথা (neuralgia, sciatica) অর্থাৎ স্নায়বিক ব্যথা হয় এবং বার্নেটের মতে থুজা হলো ইহার শ্রেষ্ট ঔষধ।