খাবারের বিষক্রিয়া Food Poisoning
বাসি, পচাঁ, ভেজালযুক্ত খাবার, হোটেল-রেস্তোরা-কারখানার মেয়াদবিহীন খাবার, মেয়াদ উত্তীর্ণ প্যাকেটজাত বা ক্যানজাত খাবার ইত্যাদি খেয়ে মানুষ বিষক্রিয়ার আক্রান্ত হয়ে থাকে। বটুলিজম (Botulism) বা ক্লস্টট্রিডিয়াম (clostridium) জাতীয় মারাত্মক বিষক্রিয়া
সাধারণত হয়ে থাকে বোতলজাত বা ক্যানজাত খাবার থেকে। যেমন জুস, জেলী, সফট ড্রিংকস ইত্যাদি। এসব মারাত্মক ধরণের ফুড পয়জনিংয়ে সত্তর ভাগ ক্ষেত্রে রোগীর মৃত্যু হয়ে থাকে।তবে উপযুক্ত হোমিও চিকিৎসায় মৃত্যুর সম্ভাবনা খুবই কমে যায়। সাধারণত দুষিত খাবার খাওয়ার
কয়েক ঘণ্টা থেকে দুয়েক দিনের মধ্যেই তার লক্ষণ প্রকাশ পায়। যেমন জ্বর আসা, শীতে কম্পন, বমিবমি ভাব, বমি হওয়া, পেটে ব্যথা, মাথা ব্যথা, অস্থিরতা, ডায়েরিয়া, দৃষ্টিশক্তির গোলমাল, পেশীর দুর্বলতা বা প্যারালাইসিস, শ্বাশ-প্রশ্বাস বন্ধ হয়ে মৃত্যু ইত্যাদি। Arsenicum
Album : ফুড পয়জনিংয়ের ক্ষেত্রে আর্সেনিক ঔষধটি মানবজাতির জন্য আল্লাহর এক বিশেষ রহমতস্বরূপ। যে-কোন ধরণের বিশেষত মারাত্মক ধরণের ফুড পয়জনিংয়ে প্রথমে আর্সেনিক খেতে ভুলবেন না।
দশ- বিশ মিনিট পরপর হিসেবে কয়েকবার আর্সেনিক খাওয়াবেন।
তাতে কোন উপকার না হলেই কেবল অন্য ঔষধের কথা চিন্তা করবেন। ভীষণ বমি, ভয়ানক পেট ব্যথা, পাতলা পায়খানা ইত্যাদি দিয়ে শুরু হয় এবং তারপর পায়খানার সাথে রক্ত ও মিউকাস যেতে থাকে। রোগী অল্প সময়ের মধ্যেই একেবারে বিছানায় পড়ে যায় অর্থাৎ দুর্বল-অবসন্ন
হয়ে পড়ে। রোগী মৃত্যুর ভয়ে কাতর হয়ে পড়ে। Aconitum Napellus : জ্বর, বমি, পেট ব্যথা, মাথা ব্যথা, ডায়েরিয়া ইত্যাদি লক্ষণ যদি ঝড়-তুফানের মতো হঠাৎ প্রচণ্ডরূপে শুরু হয়, তবে ঘনঘন একোনাইট খাওয়াতে ভুলবেন না। রোগীর কষ্ট এত বেশী থাকে যে, তার এখনই
মৃত্যু হবে এমন মনে হতে থাকে। Phosphorus : যদি পায়খানার ওপর রোগীর কোন নিয়ন্ত্রণ না থাকে, তবে ফসফরাস খাওয়াতে হবে। যেমন রোগী বিছানায় পায়খানা করে দিয়েছে অথচ সে টেরই পায়নি কখন পায়খানা বের হয়ে গেলো।
China Officinalis : সাধারণত পঁচা মাছ খেয়ে ফুড পয়জনিং হলে চায়না প্রযোজ্য। পাতলা পায়খানার সাথে হজম হওয়া খাবার বেরিয়ে যায়, ফল-ফুট ও দুধ খেলে ডায়েরিয়া বেড়ে যায়। Colocynthis : ফুড পয়জনিংয়ের কারণে যদি পেটে প্রচণ্ড ব্যথা হতে থাকে,
পেটে ছুরি মারার মতো ব্যথা হয়, পেটে জোরে চাপ দিলে ব্যথা কমে যায়, তবে কোলোসিন্থ খেতে হবে। আমাশয়ের মতো পায়খানা হয় এবং কিছু খেলে-পান করলে পেট ব্যথা, আমযুক্ত পায়খানা বেড়ে যায়। Ipecac : ইপিকাক ঔষধটির প্রধান লক্ষণ হলো সারাক্ষণ বমিবমি ভাব,
সাথে সাংঘাতিক পেট ব্যথা এবং পায়খানার বেগ থাকতে পারে। জিহ্বা পরিষ্কার থাকে। Pulsatilla Pratensis : সাধারণত তেল-চর্বি জাতীয় খাবার খেয়ে ফুড পয়জনিং হলে পালসেটিলা প্রযোজ। পালসেটিলার প্রধান লক্ষণ হলো একেক বার একেক রকম পায়খানা হয়।
রোগী তিনবার পায়খানা করলে তিনবারের পায়খানা দেখতে তিন রকম হবে। Urtica Urens : সাধারণত শামুক-ঝিনুক-চিংড়ি ইত্যাদি শক্ত খোঁসাওয়ালা খাবার খেয়ে ফুড পয়জনিং হলে আর্টিকা ইউরেন্স খেতে হয়। আবার প্রচণ্ড গরমের সময় ঠান্ডা খাবার খেয়ে কোন সমস্যা হলে
প্রথমেই এই ঔষধটি খেতে ভুলবেন না।