Secale cor (সিকেলিকর): ডা.এইচ.সি.এলেন
১। জ্বালা ও গরম কাতরতা।
২। রক্তস্রাব ও আক্ষেপ।
৩। জরায়ুর শিথিলতা ও মলদ্বারের শিথিলতা।
৪। রাক্ষুসে ক্ষুধা ও অদম্য পিপাসা।
#মূলকথাঃ
১। রোগীর পায়ে হাত দিলে ঠান্ডা লাগে কিন্তু রোগীর কাছে মনে হয় তার চামড়া গরম ও জ্বালাকর।
২। সমস্ত শরীর জ্বলে, আচ্ছাদন সহ্য করতে পারেনা, ঠান্ডায় উপশম, গরমে বৃদ্ধি।
৩। জরায়ুর রক্তস্রাব আরম্ভ হলে তা অনেকদিন পর্যন্ত থাকে, স্রাব সবুজাব তরল রসের মত ও দুর্গন্ধযুক্ত।
৪। রক্তস্রাবকালে হাত-পা ঝিনঝিন করে এবং দুর্বল হয়ে পড়ে।
৫। রাক্ষুসে ক্ষুধা, পেটের অসুস্থতা থাকা সত্ত্বেও রোগী খাই খাই করে এবং টক থেতে চায়।
#উপযোগিতাঃ
১। রোগা-পাতলা, দূর্বল-স্বাস্থ্যভগ্ন, খিটখিটে ও নার্ভাস প্রকৃতির, ফ্যাকাসে গায়ের রঙ, মুখ-চোখ চুপসে গেছে এমন প্রকৃতির স্ত্রীলোকদের পক্ষে উপযোগী।
২। যে সব মহিলাদের মাংস পেশীতন্ত অত্যন্ত শিথিল, দেহের সবকিছুই শিথিল ও উম্মুক্ত হয়ে গেছে। কার্যক্ষমতা হারিয়ে গেছে, রক্তের শিরাগুলো থলথলে- প্রচুর পরিমানে কালচে, পানির মত রক্তস্রাব হয়- রক্তকণিকাগুলো যেন নষ্ট হয়ে গেছে এমন লক্ষণে উপযোগী।
৩। রক্তস্রাব হবার প্রবণতা: সামান্য ক্ষত হতে কয়েক সপ্তাহ যাবৎ রক্তপাত হতে থাকে (ফস, ল্যাকে), কলতানির মত তরল রক্ত যা খুব তাড়াতাড়ি পচে যাবার সম্ভাবনা থাকে এমন রক্তস্রাব হয়।
৪। হাতে-পায়ে ঝিঁঝিঁ ধরে, অত্যন্ত দূর্বল বোধ করে কিন্তু এসবের কারণ পূর্বে কোন প্রকার জৈবিক তরলের অপচয়ের কারণ থেকে না হলে এ ঔষধ চিন্তনীয়। শ্বেতপ্রদর সবজে, বাদামী ও দূর্গন্ধযুক্ত।
৫। ফোঁড়া: ছোট ছোট সবুজ পুঁজযুক্ত, ব্যথা থাকে, দেরীতে পাকে আবার সারতেও দেরী হয়- ফোঁড়া হলে খুব দূর্বল হয়ে পড়ে।
৬। মুখ ফ্যাকাসে, চামড়া কুঁচকে গেছে, ছাই বর্ণ, ভাবলেশহীন, চুপসে গেছে, চোখ দু’টো ভিতরে ঢুকে যায়, চোখের চারধারে কালোদাগ পড়ে এমন ক্ষেত্রে উপযোগী।
৭। রাক্ষুসে ক্ষুধা: অসাভাবিক, উদরাময় হয়ে দুর্বল হয়ে পড়লেও ঐরকম ক্ষুধা হয়, টক খেতে ও লেমনেড খেতে স্পৃহা।
৮। উদরাময়: প্রচুর পানির মত তরল মল, পঁচা গন্ধযুক্ত বাদামী রঙের মল, তোড়ে বের হতে থাকে (গ্যাম্বোজ, ক্রোটন), উদরাময় হলে ভীষণ ক্লান্ত হয়ে পড়ে, পেটে ব্যথা থাকে না, মল অসাড়ে বের হতে থাকে, মলদ্বার হা করে থাকে (এপিস, ফস)।
৯। বিছানায় প্রসাব: বৃদ্ধবয়সে হয়, অসাড়ে প্রসাব, ফ্যাকাসে পানির মত স্বচ্ছ বা রক্ত মেশানো মূত্র, প্রসাব বন্ধ হয়ে যায় এসব লক্ষণে উপযোগী।
১০। জ্বালা: সমস্ত অঙ্গপ্রত্যঙ্গে জ্বালা হয়, যেন আগুনের ফুলকি গায়ে এসে পড়ছে (আর্স)।
১১। গ্রাংগ্রীণ: বার্ধক্যে শুষ্ক গ্যাংগ্রীণ- বাহিরের উত্তাপে বেড়ে যায়। গ্যাংগ্রীণ শুরু হলে প্রায়ই দেহে কালো কালো ছাপ পড়ে, রক্তপূর্ণ ফোস্কা বের হয়।
১২। দেহের চমড়া ঠান্ডা- ছুঁলে বোঝা যায়, তবুও গায়ে ঢাকা রাখতে পারে না, হাত-পা বরফের মত ঠান্ডা। নাড়ী ক্ষুদ্র, দ্রুত, সঙ্কুচিত, প্রায়ই সবিরাম প্রকৃতির।
১৩। ঋতুস্রাব: অনিয়মিত, প্রচুর পরিমাণে কালচে, তরল রক্তস্রাব- ঋতুর সময় তলপেটে প্রসববেদনার মত চাপমত বেদনা। পরের ঋতু অবধি পানির মত রক্তস্রাব হতে থাকে এসব লক্ষণে উপযোগী।
১৪। গর্ভের তৃতীয় মাসে গর্ভপাতের আশঙ্কা থাকে (স্যাবাইনা), ঐ সময় একটানা চাপ দেয়ার মত বেদনা, কিছু বের হয়ে আসবে এই অনুভূতিসহ বেদনা হতে থাকে।
১৫। প্রসবের সময়ে অনিয়মিত বেদনা, অত্যন্ত দূর্বল, বেদনা উঠে আবার নেমে যায়, সবকিছুই শিথিল ও উম্মুক্ত মনে হয়, তবুও কিছু বের হয় না, মূর্চ্ছা যায় এসব লক্ষণে উপযোগী। সিকেলি-কর প্রসববেদনা বাড়ায়, অতিরিক্ত ও ক্ষতিকারক রক্তস্রাব রোধ করে।
১৬। প্রসবের পর অনেক্ষণ যাবৎ ভ্যাদাল ব্যতা, অত্যন্ত বেদনা হতে থাকে, ঘন্টাঘড়ির মত তলপেটে সঙ্কোচন অনুভূতি হয়। রোগা-পাতলা, শীর্ণ-ক্লান্ত দূর্বল প্রসূতিদের স্তনদুগ্ধ লোপ পায়, স্তনে পর্যাপ্ত পরিমানে দুগ্ধ সঞ্চার হয় না।
১৭। প্রসবের পরে রক্তস্রাবে- সিনামোনামের সাথে তুলনীয়। আর্সেনিকের সমগুণ অথচ শীত ও উত্তাপ লক্ষণ বিপরীত। কলেরা মরবাস রোগে কলচিকামের সদৃশ। ঋতুকালীন অতিরিক্ত রজোস্রাবে উচ্চশক্তি অন্যথায় নিম্নশক্তি ব্যবহার্য-হেরিং।
১৮। বৃদ্ধি: উত্তাপে ঢাকা দিয়ে দেহ গরম হলে, দেহের সব অঙ্গপ্রত্যঙ্গে ও সবরোগেই উত্তাপে বৃদ্ধি। উপশম: ঠান্ডা বাতাসে, ঠান্ডা লাগলে, আক্রান্ত অঙ্গের ঢাকা সরালে, আক্রান্ত অঙ্গ ঘসলে উপশম।