Sangunaria Nitric (স্যাঙ্গুনেরিয়া নাইট্রিক)
১। নাসিকার মধ্যে মাংসময় অর্ব্বুদ, নাসিকা অবরুদ্ধ রয়েছে এইরুপ অনুভূতি।
২। গলদেশ কর্কশ , শুষ্ক, সংকোচন ও জ্বালাকর।
৩। ক্ষণকালস্থায়ী, খুকখুকে কাশি,তৎসহ পুরু,হলদে ও মিষ্টি শ্লেষ্মা নির্গমণ।
৪। জিহ্বার পার্শ্বদেশে ক্ষত। চক্ষু হতে পানি পড়া।
# চরিত্রগত লক্ষণ:
১. তরুন ও পুরাতন সর্দি, তরুন ফ্যারিঞ্জাইটিস, গলনালীতে ও স্টার্নমের পশ্চাতে বেদনা, ইনফ্লুয়েঞ্জা, হাঁচি, নাসিকার পলিপাস, গলাধরা, শির:পীড়া, কাশি|
২. মাথায় ও চক্ষুতে বেদনা, চক্ষু হতে জল পড়া, নাক সাঁটিয়া ধরা, টার্বিনেটসের বিবৃদ্ধি|
৩. অধিক পরিমানে জলের মত শ্লেষ্মা নির্গমন। নাসিকার ভেতর জ্বালা কিংবা নাসিকা শুষ্ক। অল্প পরিমানে শ্লেষ্মা স্রাব। নাসিকার ভিতর মামড়ি পড়ে, উহা উঠাইয়া ফেলিলে রক্ত বাহির হয়। নাসিকার ভিতর ক্ষতের মত বেদনা। জলের মত সর্দি নির্গমন সহ নাসিকার গোড়ায় চাপবোধ। ৫/৭ মিনিট অন্তর হাঁচি। ডান নাক দিয়া অনবরত জলপড়ে। মুক্ত হাওয়ার জন্য ব্যাকুল থাকে|
৪. গয়ারের স্বাদ মিষ্ট ও হলদে|
৫. নির্দিষ্টকাল ব্যবধানে শির:পীড়া। শির:পীড়া ৭ দিন অন্তর আসে, প্রাতে জেগে উঠলেই আরম্ভ হয় কিংবা শির:পীড়াই রোগীকে জাগিয়ে তোলে। তা মাথার পশ্চাৎভাগে শুরু হয় ও উর্ধ¦দিকে বিস্তৃত হয়ে ডান চোখের উপর ও ডান শঙ্খদেশে অবস্থান করে। সমস্ত মাথাটি উত্তপ্ত হয় ও কনকন করে। তা দিবাভাগে বাড়ে ও আলোকে খারাপ হয়, সুতরাং রোগী অন্ধকার ঘরে গিয়ে শুয়ে পড়তে বাধ্য হয়। বমন উপস্থিত হয় ও বমিতে পিত্তময়, পিচ্ছিল তিক্ত পদার্থ ও খাদ্য উঠে এবং তারপর রোগীর যাতনার উপশম হয়। শির:পীড়া উর্ধ¦ বা অধ: যে কোন দিকে বায়ু নির্গত হলে উপশমিত হয়। যখন শির:পীড়া অপরাহ্ণ বা সন্ধ্যার দিকে বেড়ে উঠে তখন এত প্রবল হয় যে রোগী শয্যা গ্রহণ করতে বাধ্য হয় । মাথাটি ক্ষত যুক্ত হয় ও তখন কোন ঝাঁকি লাগা পা পদক্ষেপ করা কষ্টকর হয়ে উঠে । তীব্র শির:পীড়া প্রায়ই আলোকে, শব্দে, সঞ্চালনে বাড়ে। শীতভাবের সাথে কপালটি ফেটে যাওয়ার মত শির:পীড়া ও তৎসহ পাকস্থলীতে জ্বালা।
৬. শুতে যাওয়ার সময় হাতের তালু ও পায়ের তলা গরম হয় সেজন্য ঐগুলিকে শয্যার বাহিরে রাখতে বাধ্য হয়।
৭. সব রকম স্নায়ুশূল বেদনা-কর্তনবৎ, ছিন্নকর, বিদীর্ণকর যন্ত্রণা মনে হয় পেশীগুলিকে ছিঁড়ে ফেলা হচ্ছে টেনে ধরা হচ্ছে। স্নায়ুবিক হোক আর বাতজই হোক, শরীরের সর্বত্র ছিন্নকর যন্ত্রণা।মস্তক ত্বকে যন্ত্রণা কিন্তু আরও বিশেষভাবে স্কন্ধ ও ঘাড়ের চারদিকে; রোগী শয্যায় পাশ ফিরতে পারে না, হাত তুলতে পারে না, কেবলমাত্র তা সামনে ও পশ্চাতদিকে দোলাতে পারে। যন্ত্রণা রেখার মত ঘাড়ের মধ্যে উঠে, স্কন্ধের ত্রিকোণাকার পেশীর মধ্যে বিস্তৃত হয়। দক্ষিণ স্কন্ধে বাত বেদনা তার জন্য রোগী তার বাহু ওপর দিকে উঠাতে পারে না, ঘাড় ও ঘাড়ের পশ্চাতের সব পেশীগুলি আক্রান্ত হয়, গ্রীবাস্তম্ভ দেখা দেয় । যদি যন্ত্রণা দিনে উপস্থিত হয়, তাহলেও তা দিনে বাড়ে, রাত আরম্ভ হওয়ার সাথে সাথে আরও বাড়তে থাকে।
৮. খুব দীর্ঘক্রিয় ঔষধ নয়।
৯. যথেষ্ট থুতু ফেলার সাথে বমি বমি ভাব ও পাকস্থলীতে জ্বালা । বমি বমি ভাব বমিতে উপশমিত হয়। রোগী বমি করতে ও ওয়াক তুলতে থাকে।
১০. তিক্তজল, অ¤ø, ক্ষতকর তরল পদার্থ, অজীর্ণ বক্ষিত দ্রব্য , ক্রিমি বমন, বমনের আগে উৎকণ্ঠা, তৎসহ শির:পীড়া ও পাকস্থলীতে জ্বালা বমনের পর অবসন্নতার সাথে মস্তক লক্ষণের উপশম।
১১. শির:পীড়া অন্যান্য রোগে স্যাঙ্গুইনেরিয়ার এক রকম মূর্ছাভাব থাকে, তা এক প্রকার ক্ষুধার মত কিন্তু ঐ ক্ষুধা খাদ্যের ক্ষুধা নয় ।একরকম নিমগ্নতাভাব, সবকিছুই যেন চলে গেছে এরুপ শূণ্যতাবোধ। খাদ্যের চিন্তায় ও খাদ্যের গন্ধে বিতৃষ্ণা আসে।শির:পীড়ার সাথে ক্ষুধা, দুষ্ট ক্ষুধা; শির:পীড়া ও শীতভাবের সাথে পাকস্থলীতে জ্বালা।
১২. যকৃত রোগ, যন্ত্রণা, কনকনানি ও পূর্ণতার অনুভ‚তি। সাধারণভাবে একে পৈত্তিক গোলযোগ বলা হয়। মনে হয় যেন যকৃত প্রচুর পরিমাণে পিত্ত উৎপাদন করে কিন্তু পাকাশয় ও দ্বাদশাঙ্গুলান্ত্রের সর্দি রোগ থাকে, সেজন্য পিত্ত নিম্ন দিকে যাওয়ার পরিবর্তে পাকস্থলীতে উঠে আসে, ও ঐ বিকৃত পিত্ত এক রকম তিক্ত সবুজ হলদে তরল পদার্থরুপে বমন হয়ে যায়।ইহা একটি অদ্ভুত ব্যাপার।
১৩. ঔষধটি ডানদিককে পছন্দ করে কিন্তু ইহা দ্বারা বামপার্শ্বের রোগ ও আরোগ্য হয়।
১৪. কাশি রাতে বাড়ে, তার সাথে উদরাময় থাকে।রাত্রিকালিন বৃদ্ধিযুক্ত কাশি, তৎসহ উদরাময় এ ঔষধটি প্রয়োগ করবার পক্ষে একটি বিশেষ লক্ষণ।
১৫. সব ক্ষেত্রেই জ্বালা, বমন ও উদরাময় থাকে।
১৬. পাকস্থলীর গোলযোগ, অতিভোজন, গুরুপাক খাদ্য খাওয়া, মদ্যপানহেতু শির:পীড়া।যে সব ব্যক্তি বিয়ার পান করে পাকস্থলীকে বিশৃঙ্খল করে ফেলে, হজম শক্তিকে দূর্বল করে ফেলে, তারা খেতে পারেন, এক চামচ পানি খেলেও বমি করে ফেলে। কোন খাদ্য বা পানীয় পেটে থাকে না। ঐরুপ উপসর্গগুলির সাথে শির:পীড়া সংযুক্ত থাকে।
১৭. জিহ্বা লাল ও কোন উত্তপ্ত জিনিসের সংস্পর্শে আসলে যেরুপ হয় তদ্রæপ জ্বালা করে। কণ্ঠনালী ও অন্ননালীতে জ্বালা, মুখের টাকরায় জ্বালা । জ্বালাকর টনসিল প্রদাহ।গলার মধ্যে উত্তাপবোধ, শ্বাসবায়ু গ্রহণ করলে উপশমিত, গলা এত শুষ্ক যে মনে হয় তা ফেটে যাবে।সকল আক্রান্ত শ্লৈষ্মিক ঝিল্লী সম্বন্ধেই এই জ্বালাকর হাজাজনক অনুভ‚তিটি খাটবে।
১৮. একজন বায়ুনালীর সর্দিহেতু দূর্বলীকৃত রোগী, সে সর্দিপ্রবণ প্রত্যেকবার আবহাওয়ার
পরিবর্তনে, প্রত্যেকবার ভেজা আবহাওয়ায়, প্রত্যেক বায়ুপ্রবাহে, পোষাক পরিবর্তন করায়, সর্বদাই সর্দিগ্রস্থ হয়ে পড়ে।তার বক্ষাস্থির পশ্চাতে বুকে জ্বালা করে, ঘন আঠাল দড়ির মত গয়ের উঠে, শূণ্য উদ্গার উঠে। বক্ষে জ্বালা, কথা বলার সময় কণ্ঠে ও কণ্ঠনালীতে ভীষণ যন্ত্রণা, উদ্গারে পরিসমাপ্ত কাশির সাথে হাতে ও পায়ের তলায় জ্বালা থাকে তাহলে স্যাঙ্গুইনেরিয়া কষ্টের লাঘব করবে। এরুপ
রোগীকে সালফার দিলে তাদের ক্ষতি হয়।
১৯. স্বরযন্ত্রে জ্বালা ও ক্ষতের মত বেদনা।গলার পুরনো সর্দি, গলার শ্লৈষ্মিক ঝিল্লীগুলির দৃশ্যমান
পুরুতাপ্রাপ্তি।নাসিকা ও গলকোষ শ্লেষ্মায় পূর্ণ থাকে।সে গলায় খেঁকারি দিয়ে শ্লেষ্মা তোলে, গলায়
একরকম জ্বালা ভাব থাকে, যতবার তার নতুন সর্দি লাগে, ততবারই জ্বালা খুব স্পষ্টভাবে লক্ষিত হয়।
২০. নি:স্রাবগুলির ক্ষতকারিতা আর একটি লক্ষণ।নাকের মধ্যে বিদাহী শ্লেষ্মা জমে, তাতে গলায় জ্বালা
করে। পাকস্থলী থেকে গরম তরল পদার্থের উদ্গার উঠে, তাতে গলা ও মুখগহŸর হেজে যায়।
২১. ষ্ট্যার্নাম অস্থির অর্থাৎ বুকের মাঝের হাড়ের পশ্চাতে যেখানে বাযুনলী দুইভাগে বিভক্ত হইয়াছে তথায় ভয়ানক বেদনা । তৎসহ আক্ষেপিক কাশি।কাশিলে বেদনার অতিরিক্ত বৃদ্ধি।কাসিবার সময় বুকে ঘড়ঘড় শব্দ করিতে থাকে।গাঢ় হলদে কিংবা রক্ত মিশ্রিত গয়ার উঠে, ডানদিকের টনসিলের বেদনা, গিলিতে কষ্ট।প্রাতে শয্যা ত্যাগ করিয়া একটু এদিক ওদিক করিলেই কাশি।
২২. বর্জনীয় খাবার : মিষ্টি * গ্রহণীয়: ঠান্ডা পানীয়।