Ignatia Amara (ইগ্নেসিয়া অ্যামারা): গুরুত্বপূর্ণ রুব্রিকসহ
♣ সমনামঃ ইগ্নেসিয়া, ফাবা-সেঙ্কটি ইগনাশি, সেন্ট ইগ্নেশিয়ান বিন।
♣ মায়াজমঃ সোরিক, টিউবারকুলার।
♣ সাইডঃ ডানপাশ, ওপরে ডানপাশ নিচে বামপাশ।
♣ কাতরতাঃ শীতকাতর।
♣ উপযোগিতাঃ স্নায়বিক রোগীদের পক্ষে বিশেষভাবে উপযোগী। আলস্য, কৃশ/ শুকনো
ব্যক্তি, চুল কালো, গৌরবর্ণা : রঙ ময়লা কিন্তু মন খুব নরম, সবকিছু বোঝেন
তাড়াতাড়ি ও কাজকর্ম তাড়াতাড়ি করেন এমন ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।
♣ ক্রিয়াস্থলঃ মন, নার্ভাস সিস্টেম, সেরিব্রো স্পাইন্যাল এক্সিস বা
মেরুমজ্জা, মেরুদন্ড, মস্তষ্ক, গলদেশ, গ্ল্যান্ড, পরিপাকতন্ত্র, চোখ,
সূত্রগ্রন্থি, স্ত্রীজননেন্দ্রিয়।
♣ বৈশিষ্ট্যঃ সকল ইন্দ্রয়শক্তির সংজ্ঞাধিক্য এবং ইন্দিয়গুলোর ক্ষণিক
সঙ্কোচন উৎপন্ন করে। রোগিনী অত্যানুভূতিসম্পন্না, সহজেই উত্তেজিত হয়,
কোমলস্বভাব, সব কিছুই দ্রুত বুঝে ফেলে, দ্রুত কাজ করে। অতি দ্রুত শারীরিক
লক্ষণ ও মানসিক ভাবের পরিবর্তন ঘটে; একটির বৃদ্ধিতে অপরটির হ্রাস। মন ও
দেহের কাজ পরস্পরবিরোধী ভাবাপন্ন। রোগ লক্ষণের কৃত্রিমতা ও পরিবর্তনশীলতাই
এটার চরিত্রগত লক্ষণ।
♣ ফিজিওলজিক্যাল কাজঃ এতে স্নায়ুগুলোতে স্পর্শাধিক্যতা অত্যন্ত বেড়ে যায়
এবং এর ফিজিওলজিক্যাল কাজকে পাঁচ ভাগে ভাগ করা যেতে পারে। যথা-
১। এটা কশেরুকা মজ্জার (Spinal Cord) ওপর ক্রিয়া প্রকাশ করে চেতনাধিক্য আক্ষেপ ও পক্ষাঘাত আনয়ন করে।
২।এটা চোখের ওপর ক্রিয়া প্রকাশ করে হিস্টরিক্যাল দুর্বলতা আনে ।
৩। এটা গলার ভেতরে গুল্মাবায়ুর মতো অবস্হা আনয়ন করে।
৪। এটা পাকাশয়িক শূন্যতা অর্থাৎ খালি খালি বোধ আনয়ন করে ।
৫। এটা অন্ত্রে ক্রিয়া প্রকাশ করে সরলান্ত্র অর্থাৎ হারিশ বহিরাগমন ঘটিয়ে থাকে।
♣ সারসংক্ষেপঃ স্নায়বিক ধাতুপ্রধান রোগীর অবরুদ্ধ মনোভাবজনিত অসুস্হতা।
কৃত্রিমতা ও পরিবর্তনশীলতা। পাকস্হলী ‘খালিবোধ’ সে সাথে দীর্ঘ নিঃশ্বাস।
কপিপানে, চাপ দিলে ব্যথাহীন স্হানে, তামাকে, সান্ত্বনায়, মানসিক পরিশ্রমে,
মানসিক আঘাত বা চাঞ্চল্যে, আবেগ, ও শোকে বাড়ে। অবস্হান পরিবর্তনে,
আহারকালে, উনুনের গরমে, ব্যথাযুক্ত পাশে শয়নে, কঠিন দ্রব্য কাওয়ায় ও দীর্ঘ
শ্বাস নিলে কমে। ভাপ্রবণাতা, অসহিষ্ণুতা, মানসিক অবসাদ, বিষণ্নতা, ক্রোধ,
উৎকণ্ঠা, অপ্রকাশিত মনোদুঃখ, ভ্রান্ত বিশ্বাস, লোকসঙ্গ বিতৃষ্ণা,
খুঁতখুঁতে, নৈরাশ্য, প্রেমাতুর ও ঝগড়াটে। ক্রোধ, শোক, ভয়, হতাশ প্রেম,
দুঃসংবাদ ও দুঃখের কুফলে রোগোৎপত্তি। মন ও দেহের কাজ পরস্পর বিরোধী এবং
বিরুদ্ধভাবাপন্ন হ্রাস-বৃদ্ধি। ঘন ঘন বা বার বার চমকে ওঠে।
♣ অনুভূতিঃ ১) রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে আছে এমন অনুভূতি, ফোলা অনুভূতি:
গ্রন্হিগুলো। ২) সাদা গয়ের মিশ্রিত সূতোর অনুভূতি, ভেতরে বল থাকার অনুভূতি।
♣ ক্রম ও সহচর লক্ষণঃ ১) ভয়/শাস্তি/ক্রোধের পর হতে নীরব শোক। ২) সর্বদা ঢোক গিলতে থাকলে রোগলক্ষণের উপশম হয়।
< বৃদ্ধিঃ প্রাতে, সকালে, বিকেলে, সন্ধ্যায়,শয্যা গ্রহণের পর, মধ্য
রাতের অাগে, মধ্য রাতের পরে, মদ জাতীয় উত্তেজক পদার্থে, ঠাণ্ডা বাতাসে,
আহারের আগে, কফিপানে, শীতল পানীয়ে, ফলে, ঋতুস্রাবের প্রারম্ভে ও সময়ে,
ঘামেন পর, চাপ দিলে ব্যথাহীন স্থানে ব্যথা বাড়ে, ট্রেনের পরিশ্রমে,
সান্ত্বনায়, দুশ্চিন্তা, ধুমপানে, তীব্র গন্ধে।
> হ্রাসঃ অবস্হান পরিবর্তনে, আহারকালে, আহারের পরে খাদ্য: ভিনেগারে,
শুয়ে থাকলে, চিৎ হয়ে শুলে, একপাশে চেপে শুলে, ব্যথাযুক্ত পাশে শুলে, চুম্বক
শক্তিতে, জাগরণে, মর্দনে, দৌড়ালে, ঘুমের পরে, ঘুম থেকে জাগরণে, উনুনের
গরমে, একা থাকলে, শক্ত চাপে, গরমে, প্রচুর মূত্রত্যাগে, ব্যথাযুক্ত পাশে
শয়নে, ভ্রমণে, কঠিন দ্রব্য খাওয়ায়, খাবারের সময়, দীর্ঘ শ্বাস নিলে, টক
খেলে।
♣ কারণঃ ক্রোধ, শোক, দুঃখ, ভয়, দুশ্চিন্তা, উদ্বিগ্নতা, বিফল প্রেম, হতাশ
প্রেম, তামাক, কফি, চা ও মদ, মেরুদণ্ডের পুরনো আঘাত, ঈর্ষা, বিরক্তি,
যৌনেচ্ছা বাধাপ্রাপ্ত, দুঃসংবাদ, সূর্যালোকে থাকার ফলে, লজ্জাজনক বা
অপমানজনক কোনো ঘটনার আঘাত।
♣ ইচ্ছাঃ অম্ল খাদ্য, রুটি, মাখন, পনির, ফল।
♣ অনিচ্ছাঃ তামাক, মদপান, গরম খাদ্য, মাংস, দুধ, কফি।
♣ শত্রুভাবাপন্নঃ কফি, নাক্স, ট্যাবেকাম।
♣ ক্রিয়ানাশকঃ অ্যাসিড-অ্যাসে, আর্নি, কোক্কাস, ককু, ক্যামো, পালস, ক্যাম্ফ, কফি, নাক্স-ভ।
♣ এটি ক্রিয়ানাশকঃ ব্র্যান্ডি, কফি, ক্যামোমাইল চা, তামাক, সেলেন জিঙ্ক।
♣ সতর্কীকরণঃ ১) কফিয়া এবং নাক্স-ভমিকার পর ইগ্নেসিয়া ব্যবহৃত হয় না। ২)
ইগ্নেসিয়া রাতের পরিবর্তে সকালে ব্যবহার করা শ্রেয়। রাতে ব্যবহার করলে
লক্ষণগুলো বেড়ে যায়।
♣ প্রয়োগঃ ১) অধিকাংশ ক্ষেত্রে ইগ্নেসিয়া সকালে প্রয়োগ করা উচিত। ডা. ডি. সি. দাস গুপ্ত।
২) সাধারণত নিম্ন থেকে মধ্য শক্তি ব্যবহৃত হয়। কিন্তু স্পাইনালকর্ড,
মস্তিষ্ক এবং স্নায়ুমণ্ডলের পীড়ায় উচ্চশক্তি ব্যবহৃত হয়। নিম্নশক্তির ওষুধ
পুনঃপ্রয়োগ করা যেতে পারে বিন্তু উচ্চশক্তির বেলায় এককমাত্রা ব্যবহার করতে
হবে।
= উপরোক্ত লক্ষণ সাদৃশ্যে যে কোন রোগেই আমরা ইগ্নেসিয়া প্রয়োগ করতে পারবো।
১.১) ক্রোধ (Anger) ঃ-খিটখিটে ভাব- অ্যাকোন, অ্যানাকা,আর্স, অরাম, ব্রায়ো, ক্যামো, ইগ্নে ক্যালি-কা,ক্যালি-সাল, লাইকো, ন্যাট্র-মি, নাই-অ্যামি,নাক্স-ভ, পেট্রো,সিপি,স্ট্যাফি, সালফ।
১.২) ক্রোধ: বিরক্তি প্রভৃতি পরবর্তী পীড়া হেতু- A= অ্যাকোন, ক্যামো, ককুল, কলো, ইগ্নে, ইপি, নাক্স-ভ, ওপি, প্লাটি, স্ট্যাফি।
১.৩) ক্রোধ: অপ্রকাশিত মনোদুঃখসহ- A= ইগ্নে, লাইকো, স্ট্যাফি। B= ককুল, কলো, ন্যাট্র-মি, ফস-অ্যাসি।
১.৩) প্রতিবাদ করলে- A= অরাম, ইগ্নে, সিপি।
২) উৎকণ্ঠা: ভয়ের সাথে- A= অ্যাকোন, অ্যানাকা, আর্স, কস্টি, ইগ্নে, সোরিন, সিকেলি।
৩) গুম হয়ে চিন্তা করে (Brooding) A= ইগ্নে, ভিরেট।
৪) লোকসঙ্গ (Company) বিতৃষ্ণা / সমাজ (Society)/ নির্জনতা (Solitude)- A= অ্যানাকা, ব্যারা-কা, কার্বো-অ্যানি, ক্যামো, সাইকু, জেলস, ইগ্নে, ন্যাট্র-মি, নাক্স-ভ।
৫) সামান্য বিষয় সম্বন্ধে অতি সচেতন খুঁতখুঁতে (Scrupulous) (Conscientious)/ খুঁতখুঁতে (Scrupulous)- A= ইগ্নে, সাইলি।
৬) সান্ত্বনা দিলে বৃদ্ধি (Consolation)- A= ইগ্নে, ন্যাট্র-মি, সিপি, সাইলি।
৭) প্রতিবাদ (Contradiction) সহ্য করতে পারে না- A= অরাম, ইগ্নে, লাইকো, সিপি।
৮) আলাপ-আলোচনা (Conversation) বৃদ্ধি- A= অ্যাম্ব্রা, ইগ্নে, ন্যাট্র-মি।
৯) ভ্রান্তবিশ্বাস (Delusions) / বিকৃত বুদ্ধি ( Crazy) / ধারণা বদলায় না (Fixed notions) –
: A- আর্জ-নাই, বেল, ক্যানা-ই, ককুল, হায়োস, ইগ্নে, ল্যাকে, পেট্রো, ফস-এসিড, স্যাবাডি, স্ট্র্যামো, সালফ।
১০) ভ্রান্ত দর্শন, কল্পনা করে- A= ক্যানা-ই, হায়োস, ইগ্নে, ল্যাকে, স্ট্র্যামো, সালফ।
১১) নৈরাশ্য (Despair)/আশাশূন্য (Hopeless)- A= আর্স, অরাম, ক্যাম্ফ, কফি,হেলি, ইগ্নে, সোরিন।
১২) ভয় (Fright) হতে রোগ- A= অ্যাকোন, ইগ্নে, লাইকো, ন্যাট্র-মি, ওপি, ফস-অ্যাসি, ফস, পালস, সাইলি।
১৩) অধৈর্যভাব ( Impatience) – A= ক্যামো, ইগ্নে, নাক্স-ভ, সিপি, সাইফ।
১৪) উত্তেজনাপ্রবণতা: সান্ত্বনায় বাড়ে- A= ইগ্নে, ন্যাট্র-মি, সিপি, সাইলি।
১৫) হাস্য করে ( Laughing) – A= ক্যানা-ই, ইগ্নে, স্ট্র্যামো।
১৬) প্রেম,হতাশা প্রেম হতে রোগ (Love, ailments, from disappointed) – A= হায়োস,ইগ্নে, ন্যাট্র- মি,ফস-অ্যাসি ।
১৭) প্রেমাতুর (Love -sick) – নির্বাক দুঃখ- ইগ্নে, ন্যাট্র-মি, ফস-অ্যাসি ।
১৮) মনোভাব সুন্দর : পর্যায়শীল- A= অ্যালু, বেল, বোভি, ফেরাম, ইগ্নে, আই, লাইকো, প্ল্যাটি, সার্সা, সাল-অ্যাসি। B= কার্বো-অ্যানি, চায়না, ক্রোকা, কুপ্রা, ড্রসে, ফেরা-ফস, গ্র্যাফ, ক্যালি-কা, ন্যাজা, নাক্স-ম, পালস, সালফ।
১৯) খোলা বাতাসে (Open air) বিতৃষ্ণা – A= অ্যামন-কা, ব্যাপটি, ক্যাল্ক, ক্যাল্ক-ফস, ক্যামো, ককুল, কফি, ইগ্নে, ক্যালি-কা, ন্যাট্র-মি, নাক্স-ভ, পেট্রো, রুমেক্স, সাইলি, সালফ।
২০) ভেতরে বল থাকার অনুভূতি- A= ইগ্নে, সিপি।
২১) অবস্হান পরিবর্তনে উপশম- A= ইগ্নে, রাস। B= ক্যামো, মেলিলো, ন্যাট্র-সাল, ফস-অ্যাসি।
২২) ভ্রাম্যমান ব্যথা ( Wandering) – A= চেলিডো, জেলস, ইগ্নে, ক্যালি-বাই, ক্যালি-সাল, ল্যাক-ক্যান, লিডাম, পালস।
২৩) চাপ দিলে ব্যথাহীন স্থানে ব্যথা বাড়ে- ( On painless side agg.)- A= ব্রায়ো, ইগ্নে, পালস।
২৪) সংবেদনশীলতা: ব্যথায় (to pain) -A= অরাম, ক্যামো, কফি, কলচি, হেলি, হিপার, ইগ্নে, ল্যাকে, লাইকো, নাই-অ্যাসি, নাক্স-ভ, ওলিয়ে, ফস, সোরিন, পালস, সিপি, সাইলি, স্ট্যাফি।
২৫) সাদা গয়ের মিশ্রিত সূতোর অনুভূতি ( Threads, sensation of) – A= ব্রায়ো, ইগ্নে, ল্যাকে, ভ্যালের।
২৬) তামাকে প্রকোপ বাড়ে ( Tobacco agg.)-
A= আর্স, ইগ্নে, নাক্স-ভ, পালস, স্ট্যাফি।
২৭) উনুনের গরমে উপশম- A= আর্স, ব্যারা-কা, হিপার, ইগ্নে, ম্যাগ-ফস, রাস, সাইলি।