Calcaria Carb (ক্যাল্কেরিয়া-কার্ব)
#নিজস্বকথাঃ
১। দেহের স্থুলতা শিথিলতা ও শ্লেষ্মা প্রবণতা।
২। ভীরুতা ও ভ্রান্তধারণা।
৩। মাথার ঘামে বালিশ ভিজে যায় ও অল্পে ঠান্ডা লাগে।
৪। ডিম খাবার প্রবল ইচ্ছা কিন্তু দুধ সহ্য করতে পারে না।
#মূলকথাঃ
১। শিশু দেখতে মোটা সোটা, থলথলে, কিন্তু বলিষ্ঠ নয়, শীর্ণতাও থাকতে পারে,
শীর্ণ হলে পেটটি বড় দেখায়, অলস, ধীরগতি বিশিষ্ট, বেশী নড়তে চড়তে চায় না,
চলতে গেলে হাঁপিয়ে পড়ে।
২। অনেকক্ষণ পর্যন্ত মানসিক পরিশ্রম করতে পারে না, কাজকর্ম করতে অনিচ্ছা,
রোগী মনে করে সে পাগল হয়ে যাবে এবং তার পাগলামি লোকে লক্ষ্য করছে এরূপ
সন্দেহ।
৩। সর্বদা শীত অনুভূতি, পা ঠাণ্ডা, মনে হয় পায়ে যেন ভিজা মোজা পড়ে আছে।
৪। শিশু ঘুম ভাঙ্গাবার পর মাথা চুলকাতে থাকে।
৫। সমস্ত পরিপাকযন্ত্র টক মনে হয়, টক ঢেঁকুর উঠে টক বমন, মলে টক গন্ধ।
৬। পর্যায়ক্রমে সর্দি ও পেট ব্যথা।
১।ক্যালকেরিয়ার মূল অনুভূতি হলো, ‘সব বিষয়ে ভরপুর (স্বাস্থ্য) থাকা এবং কোনভাবেই কোন বিষয়ে ঘটতি (দুর্বল) না থাকা।
২।ক্যালকেরিয়া জানে যে, সে (স্বাস্থ্যগত দিক থেকে) দরিদ্র হয়েছে তার সমস্যার কারনে। কিন্তু সে চায় না অন্যরা এটি জানুক। এ কারনে সে কাজকর্ম স্বাভাবিবভাবে চালিয়ে যেতে থাকে। যতই কঠিন হোক না কেন তার অপর্যাপ্ত শক্তির জন্য তার দায়িত্ব এবং কর্তব্য পালন করা তার জন্য কোন ব্যাপারই নয়। সে নিজেই এটি করার জন্য অগ্রাধিকার দিবে এবং সে কারনে সে কারো সাহায্য নিবে না বা কারো কাছে সাহায্য চাইবে না। ক্যালকেরিয়া ভীষণ অসুস্থা সত্ত্বেও তার কাজকর্ম চালিয়ে যায়। বিশ্রাম নিতে চায় না। কারন সে যে দুর্বল এটি মানুষকে জানানো কার জন্য কঠিন।
৩।দুটি কারনে সে এরূপ করে। তার সামাজিক ভাবমূর্তি ধরে রাখা এবং সে যে স্বয়ংসম্পূর্ন সেটি দেখানো অর্থাৎ নিজেই নিজের কাজ করতে সক্ষম। এ দুটি জিনিসই হলো তার জন্য সম্পদ যেগুলো সে কোনভাবেই হারাতে চায় না।
৪।তার মধ্যে ভয় আছে, যদি সে শুয়ে থাকে তাহলে একজন দুর্বল রোগী হিসেবে তার প্রতি সর্বদা নজর রাখা হবে বা তাকে সেভাবে দেখা হবে। সে বলে, ‘নিজেকে গতিশীল রাখলে অন্ততপক্ষে কেউ আমাকে অসুস্থ হিসেবে জানবে না’। সে তার স্বাস্থ্য নিয়ে মন্তব্য করাকে পছন্দ করে না। আরো বলে, অলসভাবে শুয়ে থাকা মোটেই পছন্দ করে না।
৫।ক্যালকেরিয়া বেকার বসে থাকতে পারে না এমন কি দীর্ঘসময় কাজ ছাড়া শুয়ে থাকতে পারে না। যে কারনে সে অস্ত্রপাচারের ভয় পায়, কারন এর পরে তাকে বিশ্রাম নেওয়ার দরকার। এর আরেকটি কারন হলো ইনফেকশন হওয়ার ভয়। একবার ইনফেকশন হয়ে গেলে সারতে অনেক সময় লাগবে। তখন তাকে আরো বেশী কষ্ট ভোগ করতে হবে।
৬।ক্যালকেরিয়া ইনফেকশনকে প্রচন্ড ভয় পায় কারন সে আশঙ্কা করে যদি একবার তা হয় তাহরে তার শরীরকে সম্পূর্ন খেয়ে ফেলবে। সে এত ভয় পায় যে, এমনসব স্থান বা ব্যক্তিকে এড়িয়ে চলে, এমন কি যেখান থেকে বা যাদের কাছ থেকে সংক্রামন রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা আছে।
৭।ক্যালকেরিয়া তার সামাজিক অবস্থান ধরে রাখতে কঠোর পরিশ্রম করে, যেহেতু তার অনেক শক্তি আছে অথবা অপরিমিতভাবে অর্থ ব্যয় করবে। পানির মতো অর্থ ব্যয় করে, অর্থের শ্রাদ্ধ হলেও জাহির করে। এতে সে সন্তোষ এবং গুরুত্বপূর্ন হওয়ার অনুভূতি লাভ করে। এই কল্পনা থেকে বেরিয়ে আসা তার জন্য কঠিন যে, তার কোন কিছুর অভাব নেই এবং এভাব দেখিয়ে মানুষের মধ্যে তার সামাজিক মর্যাদা ধরে রাখতে পারে। তাকে (স্বাস্থ্যে ও সম্পদে) দরিদ্র হিসেবে দেখা সে সহ্য করবে না। বড়াই করার সময় এমন ভাব দেখায় যেন সে, যে সম্পদ ও কৃতিত্বের অধিকারী অন্য কেউ তা পেতে পারে না। সে মনে করে সে একজন বিশেষ ব্যক্তি, অন্যদের থেকে অপেক্ষাকৃত ভালো। তার তাই আছে অন্যরা যেসব জিনিসের শুধু স্বপ্ন দেখে।
এটি তাকে বিশ্বে কারো চেয়ে এক ধাপ এগিয়ে থাকতে সাহায্য করে। সে প্রশংসা উপভোগ করে। অন্য কেউ প্রশংসিত হলে সে তা সহ্য করতে পারে না। পরিবারে এবং অন্যত্র যেকোন লোকের থেকে নিজের অবস্থান অধিকতর উঁচুতে ধরে রাখতে অন্যদের চেয়ে অধিক নৈপুন্য দেখানোর চেষ্টা করে। সে আশঙ্কা করে যদি তার চারপাশের লোকজন তাকে অসুস্থ অবস্থায় দেখে ফেলে তার ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রন্ত হবে।
৮।ক্যালকেরিয়া উপেক্ষিত হওয়া সহ্য করতে পারে না। সে কারনে সে যখন পরামর্শের জন্য আসে সে এটি নিশ্চিত করবে যে, তাকে যেন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন বা প্রভাবশালী ব্যক্তি হিসেবে গন্য করা হয়। সে চায় না তার চারপাশের লোকজন মনে করুক যে সে প্রতিবন্ধী বা কোন না কোনভাবে তাদের ওপর নির্ভরশীল। তার মর্যাদাই তার শক্তি। সে চায় ঘরে বাইরে তার ভাবমূর্তি হবে কঠোর পরিশ্রমী ব্যক্তির মতো এবং তার অবদান প্রশংসিত হোক। সে যে কাজ করেছে তার কৃতিত্ব যদি অন্য কেউ নেয় সেটি সহ্য করতে পারে না। সে স্বার্থপর এবং তার গর্ব তুলে ধরার চেষ্টা করে। সে সবকিছু নিজের জন্য পেতে চায়। অফিসে বা বাসায় কোন কাজ ভাগাভাগি করবে না এ ভয়ে যে অন্যদের কাছে প্রশংসা হারাবে। সে তার অংশ সামান্যতম পরিমান বিভক্ত করতে চায় না অধিকন্তু অন্যদের ভাগও চায়।
৯।সে কারনে ক্যালেকেরিয়া অহংবোধ তাকে বাধ্য করে নিজের মতো লড়তে। সে পরজীবীর মতো অর্থহীন বা অকেজো নিষ্ফল জীবনযাপন পছন্দ করে না অর্থাৎ বেঁচে থাকার জন্য অন্যের ওপর নির্ভরশীল হয়ে থাকা। সে মনে করে যে, তার জীবনের কষ্টগুলো কাটিয়ে উঠার মতো তার যথেষ্ট শক্তি আছে। সে অভিযোগবিহীনভাবে যন্ত্রনা ও বেদনা নির্বিকারভাবে সহ্য করে কাজ করেই চলে। সে বলে, তার কোন সমস্যা নেই। এই তাড়না সৃষ্টিকারী কারন হলো তার অহংবোধ। সে এটি মেনে নেয় না যে সে ক্লান্ত। তার আবেগ তার বুদ্ধিকে বাধাগ্রস্ত করে। তার আবেগ তাকে বিভ্রান্ত ও বিচারবুদ্ধিহীন বা যুক্তিহীন করে রাখে।
১০।ক্যালকেরিয়ার পেছনের অনুভূতি হলো যে, যদি সে সাহায্য চায় তাহলে সে সম্মান হারাবে এবং তার কর্তৃত্বের অধিকার। তাই সে তার সামর্থ্যের বাইরে সে চেষ্টা করে যাতে কেউ সন্দেহ না করে যে তার কোন সমস্যা আছে।