Cactus Grandi (ক্যাক্টাস গ্র্যান্ডি)
Cactus Grandi (ক্যাক্টাস গ্র্যান্ডি):
(১) মনে হয় যেন হৃৎপিন্ডটি লোহার দড়ি দিয়ে খুব টান করে বাঁধা আছে।
(২) রক্তস্রাব, সংকোচন, নির্দিষ্ট সময়ান্তর উপসর্গের প্রত্যাবর্তন।
(৩) অতিদ্রুত রক্ত বিন্দু জমাট বেঁধে যায়। রক্তসঞ্চয় জনিত শিরঃপীড়া।
(৪) মাথার চাঁদির উপর একটি বোঝা রয়েছে এইরূপ অনুভুতি।
# চরিত্রগত লক্ষণ:
১। সকল লক্ষণেই সর্বাঙ্গে ক্যক্টাসের কুঞ্চন, সঙ্কোচন ও রক্তসঞ্চয়। মস্তকে রক্তের প্রধাবন ও হস্ত-পদাদির শীতলতা । বা কোন যন্ত্রে, বুকে বা হৃৎপিন্ডে রক্তের প্রধাবন।শরীরে কখন সমান ভাবে রক্তসঞ্চালন হয় না, আক্ষেপিক ও অনিয়মিতভাবে হয়। সকল স্থানের গোলাকার তন্ত্রুগুলির আকুঞ্চনে, রক্তসঞ্চালনের বিশৃঙ্খলা ঘটে। যে-স্থান তা অনুভব করা যায় ও ইন্দ্রিয়শক্তি দ্বারা উপলদ্ধি করা যায়, সেই স্থানেই আকুঞ্চন হয়, তা যেন তারের খাঁচার মধ্যে আবদ্ধ থাকার মত অনুভ‚তি ও ঐ অনুভূতিই ক্যাক্টাসের পরিচায়ক লক্ষণ।
যে স্থানে আকুঞ্চন অনুভ‚ত হয় না, যে স্থানে অনুভ‚তি জ্ঞান থাকে না, সেই স্থানে গোলাকার তন্ত্রু সমূহের আক্ষেপিক অবস্থা উপস্থিত হয়, কিন্তু যে সঙ্কোচনটি অনুভ‚ত হয়, তা অধিক অনুভ‚ত হয় শরীরের উপরদিকে ও গোলাকার তন্ত্রুবিশিষ্ট যন্ত্রেÑনল ও নালীগুলিতে।তারা আকুঞ্চিত হয়ে পড়ে ও ঐ আকুঞ্চন আক্ষেপের মত বোধ হয়। এতে মাথার চারদিকে, বুকের চারদিকে, বক্ষব্যবধায়ক পেশীর বন্ধনী সমূহে ও উদরের সর্বত্র এক প্রকার কষে ধরা ও আকুঞ্চন অনুভ‚ত হয়। হৃৎপিন্ড বোধ হয় যেন কেহ জোরে মুঠা করিয়া ধরিতেছে আবার ছাড়িয়া দিতেছে।
২। সঙ্কোচন গ্রস্ত অঙ্গে রক্তের প্রধাবন। জরায়ুতে সঙ্কোচনের সাথে প্রবল রক্তসঞ্চয়।সঙ্কোচনের সাথে
বক্ষে প্রবল রক্তের প্রধাবন,মনে হয় যেন বুকটি প্রবল রক্তের উচ্ছাসে পূর্ণ হয়ে গেছে। ক্যাক্টাসের প্রকৃতিই হল সঙ্কোচন সৃষ্টি করা, যে সকল স্থানে পূর্বে সঙ্কোচন অনুভ‚ত হয় নাই, সেই সকল স্থানে সঙ্কোচন সৃষ্টি করা।
৩।যেখানেই হউকনা কেন, ক্যাক্টাসের বেদনা অত্যন্ত তীব্র হয়। তাতে রোগী চিৎকার করতে বাধ্য হয়, যন্ত্রণা মুঠো করে ধরার মত, সঙ্কোচনবৎ, কখন কখন তা ছিন্নকর যন্ত্রণার মত বোধ হয়, কিন্তু সব সময়েই সেই চেপে ধরার অনুভূতি থাকে।
৪। আহারের নির্দিষ্ট সময় অতিবাহিত হইলেই মাথার যন্ত্রণা আরম্ভ হয়। মুখমন্ডলের ডানদিকে
বেদনা, প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে হয়।
৫। যে কোন রোগের পর হার্টের গোলযোগ।
৬। শীতকাতর
৭। গলনলী সঙ্কোচিত, জিহ্বা শুষ্ক।
৮। রক্ত চলাচলে ব্যতিক্রম বশত: মাথা উত্তপ্ত, হাত পা ঠান্ডা।
৯। রক্তসঞ্চয়জনিত শির:ঘূর্ণন, মুখ লাল, ফোলা ফোলা, মস্তিষ্কের মধ্যে দপদপানি; মনে করে যেন সে পাগল হয়ে যাবে, শির:ঘূর্ণন শারীরিক পরিশ্রমে, বিছানায় পাশ ফিরলে, হেঁট হলে, অর্ধশায়িত অবস্থা থেকে ওঠলে ও গভীর নি:শ্বাস নিলে বৃদ্ধি পায়।
১০। শির:পীড়া আকুঞ্চনবৎ, চাপনবৎ। তা রক্তসঞ্চয় প্রকৃতির বলে অত্যন্ত তীব্র ও তৎসহ মস্তক উত্তপ্ত থাকে। মস্তকশীর্ষে চাপবোধ, যেন মাথার চাঁদিটি ভেতরদিকে ঢুকে যাবে, কিন্তু বেদনার উপর জোরে চাপ দিলে এই ভাবের উপশম হয়। মস্তকশীর্ষে ভারচাপানর মত বেদনা, চাপে উপশম, কিন্তু শব্দে, কথা শুনলে, কথা বললে বা উজ্জ্বল আলোকে বৃদ্ধি। বেলের শরীরে প্রবল উত্তাপ থাকে, কিন্তু ক্যাক্টাসে সামান্য জ্বর থাকে।
১১। মানসিক পরিশ্রমে মস্তকে উত্তাপ ক্যাক্টাসের একটি প্রবল লক্ষণ। যে সকল লোক কফি খাওয়ার অভ্যাস ছেড়ে দেয়, তাদের মধ্যেও এরুপ লক্ষণ পাওয়া যাওয়া, সুতরাং ঐ রুপ ক্ষেত্রে সাধারণত ক্যাক্টাসই ঔষধ।
১২। ক্যাক্টাসের অনেক রোগীই শ্বাস-প্রশ্বাসের বিশৃঙ্খলায় কষ্ট পায়। সেজন্যই রোগী গভীর নি:শ্বাস নিলে বৃদ্ধিলক্ষণ দেখা দেয়। যদি সে শ্বাস বন্ধ করে রাখে হৃৎপিন্ড এত দ্রæত চলতে থাকে যে, মনে হয় তা টুকরা টুকরা হয়ে উড়ে যায়।শ্বাস বন্ধ করলে শরীরের সর্বত্র বর্ধিত স্পন্দন অনুভ‚ত হয়।
১৩। বাতে ক্যাক্টাস রোগীর মুখ প্রদীপ্ত, উজ্জ্বল লাল, ক্রমশ: নীল হতে থাকে। হৃৎপিন্ডের দূর্বলতা থাকলে তা নীল হয়, ঠোঁট নীল হয়। যে রোগীর গলায় সঙ্কোচন বোধ, তৎসহ মস্তিষ্কে রক্ত সঞ্চয়, নীলবর্ণ মুখ ও বিচিত্র ঠোঁট, বামবাহুর অসাড়তা ও হৃৎপিন্ডে আকুঞ্চবোধ থাকে, তার জন্য আমাদের ক্যাক্টাস প্রয়োজন হয়।বামবাহু আশ্চর্যরুপে দূর্বল ও অসাড় হয়, ঝিন্ঝিন্ করা; পোকা হাঁটার মত সড়সড়ানি।
১৪। রক্তস্রাবের ক্ষেত্রে ক্যাক্টাসে সময়ে সময়ে অল্পাধিক রক্তবহা নাড়ীর শিথিলতা আসবেই ও ঐরুপ ক্ষেত্রে রক্তপাত স্বাভাবিক।এতে দুই প্রকার রক্তস্রাব আছে। হৃৎপিন্ড ও রক্তবহা নাড়ীসমূহের অবস্থার আনুসঙ্গিক রক্তবহানাড়ীর শিথিলতা থেকে রক্তস্রাব ও কোন যন্ত্রে ভীষণ রক্তসঞ্চয়জনিত রক্তস্রাব।সাধারণভাবে রক্তপ্রধান রোগীর মাথায় রক্তের প্রবল প্রধাবন হলে, তার নাক দিয়ে রক্তস্রাব হয়, সে খক্খক্ করে গলা দিয়ে রক্ত তোলে। বক্ষে প্রবল রক্ত সঞ্চয় হলে তার বক্ষ থেকে রক্ত ওঠে। এ রক্তসঞ্চয় হতে রক্তপাত, যক্ষারোগ সংক্রান্ত রক্তপাত নহে। জরায়ুতে রক্তসঞ্চয় হয়ে রক্তস্রাব।মূত্রাধার ও মূত্রপিন্ডে রক্তসঞ্চয় হয়ে মূত্রের সাথে রক্ত থাকা, রক্তসঞ্চয় প্রবল হলে মূত্রপথ দিয়ে রক্তস্রাব। পুরানো হৃৎপিন্ড রোগে, খুব স্পষ্টভাবে শিথিলতা বর্তমান থাকলে, শিথিলতাজনিত রক্তস্রাব।
১৫।যে সকল ঔষধে রক্ত সঞ্চালন ও হৃৎপিন্ড আক্রান্ত হয়, তাতে স্পষ্ট শিরোঘূর্ণন পাওয়া যায়।
১৬। হৃৎপিন্ড সংক্রান্ত সকল ঔষধেই আমরা ভীষণ স্বপ্ন, নিদ্রার মধ্যে মস্তিষ্কের অত্যন্ত উত্তেজনা, চমকে ও ভয় পেয়ে জেগে ওঠা ও তৎসহ সচরাচর পড়ে যাওয়ার মত অনুভ‚তি লক্ষণ পাই। নিদ্রাকালে পড়ে যাওয়ার স্বপ্ন, শরীরের নানা স্থানে দপদপ করে, সেজন্য মোটেই ঘুম হয় না।
১৭। অদ্ভ‚ত অদ্ভ‚ত স্থানে যেমন-পাকস্থলীতে, অন্ত্রে, কখনও কখনও হস্ত-পদাদিতে, পায়ের পাতায়, হাতের তালুতে, মাথায়ও স্পন্দনের অনুভ‚তি। সর্বাঙ্গে দপ্দপ্ করা। বক্ষব্যবধায়ক পেশীরবন্ধনীর চারদিকে, বক্ষের নিম্নাংশের চারদিকে, যে একগাছি দড়ি দিয়ে ক্রমাগত কষে বাঁধা হচ্ছে, এরুপ অনুভ‚তি।তা একটি অদ্ভ‚ত লক্ষণ, তার কোমরের চারদিকে এত কষে আঁকড়ে ধরে যে, তার দম বন্ধ হয়, সে শ্বাস নেবার জন্য ছটফট করে ও কোন কিছু করতে চায়। এতে তাকে ক্রমশ: বেশী করে কষতে থাকে, ক্যাক্টাস অন্ত্রে রক্তসঞ্চয় করে, জরায়ুর প্রদাহ উৎপন্ন করে। পাকাশয় প্রদাহ, তৎসহ ঐরুপ কষে থাকার অনুভ‚তি।
১৮। অর্শরোগে বৃহৎ যকৃতশিরাসমূহ, সরলান্ত্রের নিম্নশিরাসমুহ ও অর্শ সংক্রান্ত শিরাসমূহের
শিথিলতা। এই শিরাগুলি এরুপ শিথিল অবস্থায় থাকে যে, তাতে অর্বুদ উৎপন্ন হয় ও প্রচুর রক্তপাত হতে থাকে। রক্তস্রাবী অর্শবলি। গুহ্যদ্বারের সঙ্কোচন। এতে অত্যন্ত কষ্টদায়ক কোষ্ঠবদ্ধতা আছে, অর্শরোগের সাথে কোষ্ঠবদ্ধতা।
১৯। ঋতুস্রাব শুইলেই বন্ধ হয়, কিন্তু বসিলে বা নড়াচড়া করিলে পুনরায় দেখা দেয়। ঋতু খুব শীঘ্র শীঘ্র প্রকাশিত হয়, স্রাবের রং কালো আলকাতরার মত।যুবতী রক্তপ্রধানা বলিষ্ঠ স্ত্রীলোক ঋতুকালে জরায়ুর রক্তসঞ্চয়ের জন্য শয্যাগত হয়ে জরায়ুতে তীব্র আঁকড়ে ধরে ও খাল ধরার মত বেদনায় চিৎকার করতে থাকলে ক্যাক্টাস প্রযোজ্য। ঋতুপ্রবাহ ঠিক আরম্ভ হবার ঠিক প্রারম্ভে ভীষণ আক্ষেপ হয় গোলাকার তন্ত্রুগুলি সঙ্কুচিত হয় ও রোগিণী ঠিকই বলেন, যেন একগাছি ফিতে দিয়ে বেদনা ও রক্তসঞ্চয়যুক্ত জরায়ুটিকে বেঁধে রেখেছে।জমাট রক্তে জরায়ুপূর্ণ হয়ে যায় ও ঐ রক্ত নির্গত করবার জন্য প্রসববেদনার মত আক্ষেপ দেখা দেয় ও রোগিণী আবার চিৎকার করতে থাকে। কিছুক্ষণ চলবার পর রক্তস্রাব সরল হয়ে উপশম আনয়ন করে।
২০। যোনির মধ্যে রক্তস্রাবে এরুপ রক্তচাপ উৎপন্ন হয় যে, তা বের হয় যে, তা বের করা দু:সাধ্য হয়ে পড়েও স্ত্রীলোকের মূত্রনলীর উপর তা এরুপ চাপের সৃষ্টি করে যে,তার পক্ষে মূত্রত্যাগ করা অসম্ভব হয়ে উঠে।
২১। সামান্য স্পর্শে, শয়নে, ভ্রমণকালে, বামপাশে শয়নে, বেলা ১১টায় রাত্রি ১১টায়, নির্দিষ্ট সময়ে, পরিশ্রমে, উপর দিকে উঠিলে, রাত্রিতে –বৃদ্ধি।
২২। মুক্ত হাওয়ায়, বসলে, বিশ্রামে, চাপলে-উপশম।
২৩। অত্যন্ত বুক ধড়ফড়ানি, এর বক্ষ লক্ষণ প্রায়ই ১১টার সময় উপস্থিত হয় বা বর্ধিত হয় সকাল ১১ টা ও রাত ১১ টা । এর সবিরাম জ¦রে ১১টার সময় হৃৎপিন্ডে প্রবল রক্ত সঞ্চয়ের সাথে শীত উপস্থিত হয়। এর রোগাক্রমণ সকাল ১১টায় ও রাত্রি ১১টায় বা কখনও কখনও রাত্রি ১১ টায় ও কখনও কখনও সকাল ১১টায়।প্রত্যহ সকাল ১১টায় শীত।
২৪।বুকে যেন কি একটা ভারি বস্তু চাপানো আছে তজ্জন্য কষ্ট কিংবা যেন একটা লৌহ পেটি দিয়া বুক বাঁধা আছে সেজন্য হৃৎপিন্ডের স্বাভাবিক ক্রিয়ার ব্যাঘাত।
২৫। হৃৎপিন্ডের পীড়ায় লক্ষণসহ বুকে দপদপানি ব্যাথার সহিত শরীরের যে কোন স্থান হইতে রক্তস্রাব হয়।
২৬। বিষন্ন, স্বল্পভাষী, দু:খিত এবং বেরসিক, মৃত্যুভয়, ব্যথাজনিত চিৎকার, উদ্বেগ, একগুয়ে, হতাশ, কাঁদবার অদম্য স্পৃহা।
২৭। স্বাস্থ্যবান।
২৮। মল কঠিন, কাল। গুহ্যদ্বারের সঙ্কোচন।এতে অত্যন্ত কষ্টদায়ক কোষ্ঠবদ্ধতা আছে, অর্শরোগের সাথে কোষ্ঠবদ্ধতা।
২৯। এতে মূত্রাধারের পক্ষাঘাতিক দূর্বলতা আছে। এতে মূত্রাবরোধ আছে। মূত্রাধার গ্রীবার এরুপ
আকুঞ্চন হয যে বহুক্ষণ দরে মূত্র নির্গত হতে পারে না ও মূত্র অবরুদ্ধ হয়ে থাকে। মূত্রপিন্ডে এরুপ রক্তসঞ্চয় হয় যে তা মূত্রনাশের অনুক‚ল হয়। রক্তাক্ত মূত্র,চাপচাপ রক্ত। স্রাবিত রক্ত এত দ্রুত চাপ বাঁধে ও এত ঘন থাকে যে তা মূত্রপথ বন্ধ করে দেয়। মূত্রাধারের মধ্যে রক্তস্রাব মূত্রপথকে ব›ন্ধ করে দেয়।
৩০। রক্তস্রাব, সঙ্কোচন, নির্দিষ্ট সময়ান্তর উপসর্গাদি প্রত্যাবর্তন এবং আক্ষেপপূর্ণ বেদনা।
৩১। দুপুরে আহারের সময় উত্তীর্ণ হয়ে গেলে মাথা ধরে। মাথার চাদির উপর একটি বোঝা থাকার অনুভূতি।
৩২। হৃৎপিন্ডের পীড়া, শিরঃপীড়া, রক্তস্রাব, ঋতুস্রাব, বাত, গলনলীর পীড়া, সবিরাম জ্বর, হৃৎশুল।
৩৩। বর্জনীয় খাবার : কফি
৩৪। ক্রিয়ানাশক= একোন, ক্যামো, চায়না, ইউপেটো পার্ফো, ক্যাম্ফর।
৩৫। পরবর্তী ঔষধ= ডিজি, ইউপেট, ল্যাকে, নাক্স, সালফ।