মায়াজম কি? মায়াজম কত প্রকার ও কি কি?
মায়াজম (Miasm): কোন রোগ স্থুল ঔষধ প্রয়োগে বা অসম বিধানে চিকিৎসা
করায় তার দ্বারা চাপা পড়ে শক্তিশালী রোগ বীজ নামে দেহাভ্যন্তরে অবস্থান
করে। এটাই রোগ জীবানু বা উপবিশ (Miasm)। এই উপবিষই (Miasm) যা বংশ
পরস্পরায় মানব দেহে চিরস্থায়ী রুপ লাভ করে।
মায়াজম হচ্ছে এমন কিছু যা একবার মানব দেহে ঢুকলে এবং সুচিকিৎসিত না হলে এমন একটা অবস্থার সৃষ্টি করে, যা সারা জীবন ধরে চলতে থাকে এবং সন্তান সন্ততির মধ্যেও তার ফলজনিত অস্বাভাবিক অবস্থার চিহ্ন প্রায়শই সুপ্ত অবস্থায় বর্তমান থাকে।
মায়াজম (Miasm) প্রধানত তিন প্রকারঃ
(1) Psora বা কুন্ডয়ন অসম
বিধানে চিকিৎসা করায় তা উপবিষ নামে দেহাভ্যন্তরে লুপ্ত অবস্থায় সজীব
থাকে। এই সজীব Psora বীজানুই Psoric Miasm.
(2) Sycosis দেহে অবস্থান নিলে বাহ্যিক ভাবে আচিল বা টিউমার প্রকাশ করে, তা অসম বিধানে চিকিৎসা করলে উপবিষ সৃষ্টি হয়ে দেহে চিরস্থায়ী ভাবে অবস্থান নেয়। Sycosis এর উপবিষই Sycosis Miasm.
(3) Syphilis যৌন ক্ষত অসম বিধানে চিকিৎসায় চিরস্থায়ী সিফিলিস উপবিষ নামে বীজানু দেহে স্থায়ী বসবাসের সুযোগ পায়। এই Syphilis উপবিষই Syphilitic Miasm.
উপরে উল্লেখিত এই তিন ধরনের Miasm- ই যখন উত্তরসূরীর দেহে স্থানান্তরিত হয় তখন তাকে Tuberculosis বলা হয়।
সভ্য সমাজে আমরা আরও একটি মানব সৃষ্ট আর এক প্রকার মায়াজম দেখতে পাই। আর তা হলো বিভিন্ন Vaccin Miasm. অর্থাৎ টীকা ও ইনজেকশন মানবদেহে পুশ করার পর যে Miasm এর সৃষ্টি হয়, তাই Vaccin Miasm.
Miasm আক্রান্ত রোগীই চিররোগ। তাই এ সংশ্লিষ্ট রোগী চিকিৎসায় মায়াজম সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারনা থাকা অবশ্যই দরকার/প্রয়োজন।
উল্লেখ্য যে, কেবল মাত্র, প্রাকৃতিক ও সদৃশ বিধান “হোমিওপ্যাথি” চিকিৎসায়- ই Miasm ধ্বংস করতে পারে।
অনেকের ধারণা সোরা একটা মায়াজম, যার দ্বারা চিররোগের আটভাগের সাতভাগ সংঘটিত হয়। কিন্তু এখানেই আমাদের মারাত্নক ভুল। সোরা মায়াজম নয়, একটা মায়াজমেটিক অবস্থা যা সোরিক মায়াজমের দ্বারা সৃষ্টি হয়। সিফিলিস ও সাইকোসিস মায়াজম নয় মায়াজমেটিক অবস্থা, যা সিফিলিটিক ও সাইকোটিক মায়াজম দ্বারা সৃষ্ট হয়। একটা রোগাবস্থা এবং তার কারণ এক নয়।টিউবারকুলোসিস টিউবারকুলার কখনই এক হতে পারে না। দ্বিতীয়টি হলো কারণ এবং প্রথমটি হলো রোগ।