রোগী সহজেই কান্না করে, ডাক্তারের নিকট রোগের কথা বলতে গিয়ে কান্না করে। |
পরিবর্তনশীল লক্ষণ, ভ্রমণশীল বেদনা। ছিন্ন করার মত, টেনে ধরার মত বেদনার সহিত সর্বদা শীত শীত লাগে, বেদনা হঠাৎ আসে এবং ধীরে ধীরে যায়। |
প্রায় সকল রোগে পিপাসাহীনতা কিন্তু মুখের ভিতরে শুষ্কতা থাকে। |
যদিও শীত কাতর কিন্তু ফ্রেশ ও খোলা বাতাস চায়। |
শুস্ক কাশি সন্ধ্যা ও রাতে, শিথিল কাশি সকালে। উপযোগিতা — সিদ্ধান্ত নিতে পারে না, ধীর প্রকৃতি, সর্দিকাশিতে ভোগে, চুল তামাটে, নীল চোখ, ফ্যাকাসে মুখ, হাসতে হাসতে সহজেই কেঁদে ফেলতে পারে, স্নেহপরায়ণ, নম্র, ভদ্র, ভীরু প্রকৃতি সহজেই বশে আসে এমন প্রকৃতি যাদের তাদের পক্ষে উপযোগী । বিশেষতঃ মহিলাদের ওষুধ। সহজেই কাঁদে-না কেঁদে নিজের রোগের কথা, কষ্টের কথা বলতেই পারে না (ধন্যবাদ দিলে কেঁদে ফেলে=লাইকো)। বিশেষতঃ শিশু ও মহিলাদের পক্ষে উপযোগী। মহিলাদের মোটা হবার প্রবণতা ঐ সাথে ঋতু স্রাব অল্প হয় অথচ বহুদিন ধরে হতে থাকে, (গ্রাফাই) এই লক্ষণে উপযোগী। ঋতু স্রাব শুরুর বয়স থেকেই (Puberic Age) স্বাস্থ্যের গুরুতর অবনতি “সেই সময় থেকেই স্বাস্থ্য ভাল যাচ্ছে না”এ্যানিমিয়া, রঙ ফ্যাকাসেহলদে হতে থাকে, ব্রঙ্কাইটিস বা ক্ষয় রোগে ভুগতে থাকে। সমস্ত শ্লৈষ্মিক ঝিল্লী হতে ঘন, জ্বালা থাকে না এমন, হলদে সবুজ স্রাব। বার হয় (কেলি-সাল, নেট-সা)। লক্ষণগুলো বারে বারে পরিবর্তিত হতে থাকে—দুবারের শীতভাব, দুবারের মল, দুবারের রোগ আক্রমণ একই রকম হয় না, এক ঘন্টা খুব ভাল আছে পরক্ষণেই অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরস্পর বিরোধী বলে লক্ষণগুলোকে মনে হয় (ইগনে)। ব্যথা যন্ত্রণা— টেনে থাকা মত, ছিড়ে ফেলামত, স্থিরভাবে থাকে না, দেহের এক জায়গায় হতে অন্য জায়গায় দ্রুত সরে যায় (কেলি-বা, ল্যাক-ক্যা, ম্যাঙ্গানাম-এ)-ঐ সাথে সর্বদা শীত শীত বোধ-ব্যথা যত বাড়ে শীত ভাবও ততই বাড়ে। যন্ত্রণা হঠাৎ শুরু হয় ধীরে ধীরে কমে অথবা ব্যথার আবেশ হঠাৎ তীব্র হয়ে ওঠে তারপর হঠাৎ “চাটি মারার মত” চট করে কমে যায়। প্রথম নড়া চড়ায় ব্যথা বাড়ে (রাস-ট)। তৃষ্ণা থাকে না—প্রায় সব উপসর্গেই। গুরুপাক খাদ্য, কেক, প্যাস্ট্রি বিশেষতঃ শূকরের মাংস বা কাবাব খেয়ে হজমের গন্ডগোল হয়। শূকরের মাংসের কথা চিন্তা করলে বা দেখলে বিরক্তি আসে (যেহেতু চর্বির পরিমাণ বেশী থাকে)। ঘুম থেকে উঠলে সকালে মুখের স্বাদ অত্যন্ত খারাপ লাগে। সকালে ঘুম থেকে উঠলে মুখ অত্যন্ত শুকিয়ে থাকে অথচ জলতৃষ্ণা। থাকে না (নাক্স-ম) মুখ ভেজা অথচ তীব্র জলপিপাসা = মার্ক মাম্পসবোগ = ঐ রোগ রূপান্তর হয়ে স্তন বা অন্ডকোষে সরে যায়। পাকস্থলীতে খালি খালি বোধ বিশেষতঃ যারা চা বেশী যায়। উদরাময়—কেবলমাত্র রাতে বা সাধারণতঃ রাতে হয়। জলের মত, সবজে-হলদে, পরিবর্তনশীল, আহারমাত্রই; ফল খেয়ে, ঠান্ডা পানীয় বা খাদ্য খেয়ে, আইসক্রীম খেয়ে (আর্স, ব্রায়ো) রিসাল ফল খেয়ে উদরাময় ভিরেট্রাম, চায়না, পেঁয়াজ খেয়ে = থুজা, শামুক খেয়ে = ব্রোমি, লাইকো, দুধ ধেয়ে = ক্যালকে, নেট-কা, নিকোলাস, দৃষিত জল খেয়ে = ক্যাফর, জিঞ্জি উদরাময় হলে উপযোগী। ঋতুস্রাব শুরুর সময় অসুখ—পা ভিজিয়ে ঋতু চাপা পড়ে, ঋতুস্রাব অনেক দেরী করে হয়, অল্প পরিমাণে হয়, পিছলে–বেদনা হয়। অনিয়মিত থেমে থেমে হয় ঐ সাথে সন্ধ্যার দিকে শীতবোধ—ব্যথা যন্ত্রণায় অত্যন্ত অস্থির বিছানায় এপাশ ওপাশ করতে থাকে (ম্যাগ-ফস), দিনে বেশী স্রাব (শুলে স্রাব বেশী হয় = ক্রিয়ো)—এসব লক্ষণে ও প্রথম ঋতুস্রাব দেরী করে হওয়া লক্ষণে উপযোগী। ঘুম — সন্ধ্যায় আদৌ ঘুম আসে না, বিছানায় শুতে চায় না—রাতের প্রথমদিকে অস্থিরতাপূর্ণ ঘুম—জেগে ওঠার সময় হলে (ভোরের দিকে) গভীর ঘুম হয়। জেগে উঠে নিস্তেজভাব ও যেন অভাব এমনটা হয় (নাক্সের বিপরীত)। আঞ্জনী—বিশেষতঃ চোখের উপর পাতায়, চর্বিযুক্ত তেলজাতীয়, গুরুপাক খাদ্য বা শূকরের মাংস খেয়ে আঞ্জনী হলে উপযোগী (লাইকো, ষ্ট্যাফিস, তুলনীয়)। গর্ভপাতের সম্ভাবনা—স্রাব হতে হতে থেমে আবার হঠাৎ বর্ধিত বেগে স্রাব শুরু হয়—যন্ত্রণা আক্ষেপিক, দমবন্ধ মত হয়, মূর্খমত হয় ঐ সময় খোলা হাওয়ার জন্য আঁকুপাঁকু করতে থাকে। দাঁতব্যথা — মুখে ঠান্ডাজল রাখলে কমে যায় (ব্রায়ো, কফিয়া)-গরম দ্রব্যে ও তাপে বা গরম ঘরে বাড়ে। গরম ঘরে ভালভাবে নিঃশ্বাস নিতে পারে না বা শীতবোধ করে। পায়ের গোড়ালীতে অত্যধিক স্নায়বিকতা (দুর্বলতা) বোধ করে। সম্বন্ধ—কেলি-মি, লাইকো, সাইলি, এসি-সা এর অনুপূরক, কেলিমিউর এর রাসায়নিক সমগুণ। প্রায় সমস্ত রোগ লক্ষণেই সাইলিশিয়া পালসের ক্রনিক অবস্থার ওষুধ, এর আগে ও পরে কেলি-মি ভাল ফল দেয়। ক্রনিক রোগের চিকিৎসা আরম্ভের আগে পালস একটি উত্তম ওষুধ (ক্যালকে, সালফ)। যে সব রোগী বহুদিন ধরে, বহুবছর আগে হলেও যথেষ্ট লৌহঘটিত ওষুধ, টনিক, কুইনাইন ইত্যাদি খেয়ে রক্তশূন্যতায় ভুগছে বা রঙ ফ্যাকাশে হলদে হয়ে গেছে তাদের ক্ষেত্রে উপযোগী। ক্যামোমিলা, কুইনাইন, পারাযুক্ত ওষুধ, বেশী চা খেয়ে, সালফারের অপব্যবহারের রোগের সৃষ্টি হয়েছে তাদের ক্ষেত্রে উপযোগী। কেলি-বাই, লাইকো, সিপিয়া, সাইলি ও সালফের পর ভাল খাটে। বৃদ্ধি — বদ্ধ গরম ঘরে সন্ধ্যাবেলা গোধূলিলগ্নে নড়াচড়া শুরুর সময়, বাঁদিকে শুলে বা ব্যথাহীন পাশে, অত্যন্ত গুরুপাক, চর্বিযুক্ত, দুম্পাচ্য দ্রব্য খেলে, আক্রান্ত পাশের ঠিক উল্টোদিকে (সুস্থদিকে) চাপ দিলে, গরম সেঁক দিলে, উত্তাপে (কেলি-মি) বাড়ে। উপশম — খোলা হাওয়ায়, ব্যথাযুক্ত স্থানে চাপ দিয়ে শুয়ে (ব্রায়ো)। ঠান্ড বাতাস বা ঠান্ডা ঘরে, ঠান্ডা খাদ্য বা পানীয়ে, ঠান্ডা প্রয়োগে (কেলি-মি)। শক্তি — ৬ হতে উচ্চ, উচ্চতম শক্তি, ০/১ হতে ০/৩০ শক্তি। Stye (ষ্টাই) = আঞ্জনী-বৃত্তাকার স্থানিক (Localised) প্রদাহ হয়, চোখের পাতার এক বা একাধিক সিবাসিয়াস গ্ল্যান্ড ফুলে যায়। ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণে হয়। বাহ্যিকভাবে অর্থাৎ চোখের পাতার উপরদিকে হলে জি’স গ্ল্যান্ড বা গ্ল্যান্ড অব মোল (Zeis’ Gland or glands of Mole) যা চোখের পাতার কিনারায় থাকে তা আক্রান্ত হয়। চোখের পাতার ভেতর দিকে হলে মেইবোমিয়ান বা টারসাল (Meibomian of Tarsal Gland) যা চোখের পাতার ভিতর দিকে থাকে তা আক্রান্ত হয়—এগুলো বেশী মারাত্মক। লক্ষণ — সাধারণভাবে চোখের পাতা ফোলে, যন্ত্রণা হয়, স্থানিক। কনজাংটিভাইটিস হয়। পেকে গিয়ে ফেটে যায় তবে বারেবারেও হতে পারে(Taber’s Med. Dict)। মেরুদন্ড বেঁকে গেলে দারুণ উপকারী ওষুধ = কেন্ট। |