শরীরের অল্প স্থানে জ্বলে এবং শরীরের নানা স্থান যেমন মুখ, পাকস্থলী, ক্ষুদ্র অন্ত্র, মলদ্বার ইত্যাদি স্থানে জ্বলে, হাতে জ্বালা শুরূ হয়ে মুখমন্ডলে ছড়িয়ে পড়ে, মেরুদন্ড জ্বলা এর বিশেষ লক্ষণ। |
অত্যন্ত উৎকন্ঠা ও অস্থিরতা- একা থাকলে, ঝড় বৃষ্টির কিছু পূর্বে ও অন্ধকারে বৃদ্ধি। |
বরফ ঠান্ডা খাবারের প্রতি অত্যন্ত আগ্রহ ও উপশম, ঠাণ্ডা খাওয়ার পর বমি, লবন খাওয়ার প্রবল আকাঙ্ক্ষা। |
মস্তক, বুক, পাকাশয় ও সমস্ত উদরে খালি খালি অনুভূতি। |
শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ হতে অনায়েশে রক্তস্রাব, সামান্য ক্ষত হতে প্রচুর রক্তস্রাব হয়। |
রোগীর মনে হয় যে আসনে বসে আছে , সেই আসনটি যেন উপরে উঠতে আছে। |
অত্যন্ত ভালোবাসা পূর্ণ হৃদয়, অন্যের প্রতি সহজেই আকৃষ্ট ও প্রভাবিত হয়। উপযোগিতা — লম্বা পাতলা একহাড়া গড়ন, রক্তপ্রধান, গায়ের রঙ ফর্সা চকচকে চোখের পাতার চুল, মাথায় চুল হালকা ও সুন্দর বা লাল চুল, বোধ শক্তি দ্রুত ও তীব্র অনুভূতি সম্পন্ন ব্যক্তি—এমন লোকেদের অসুখে উপযোগী। অল্পবয়সী অথচ দ্রুত বেড়ে ওঠে ও কুঁজো হয়ে যায় (কুঁজো হয়ে হাঁটে = সালফ)। যাদের গায়ের চামড়া হলদে ফ্যাকাসে হয়ে যায় বা রক্তশূন্যতায় ভোগে ও যেসব বৃদ্ধদের সকালে উদরাময় হয় তাদের এ ওষুধ উপযোগী । নার্ভাস, দুর্বল ও চুম্বক শক্তির সাহায্যে পৃষ্ট তার ইচ্ছা যাদের হয় (সাইলি) তাদের পক্ষে উপযোগী। আলো, শব্দ, গন্ধ, ছোঁয়া লাগা যে কোন বাহ্যিক উত্তেজনায় অত্যধিক অনুভূতি সম্পন্ন । অস্থিরতা, চাঞ্চল্য, অনবরত নড়াচড়া করতে থাকে চুপ করে এক মুহূর্তও বসে থাকতে বা দাড়িয়ে থাকতে পারে না (অস্থিরতা, দুটো নাড়াতে থাকে = জিঙ্ক)। জ্বালা – মেরুদন্ডে ছোট ছোট স্থানে, কাঁধের দুপাশের স্ক্যাপুলা অস্থির মাঝখানে জ্বালা, (ঐ স্থানে বরফের টুকরোর মত ঠান্ডা অনুভূতি ল্যাকন্যানথিস), বা অত্যন্ত উত্তাপের অনুভূতি পিঠ বেয়ে উঠতে থাকে, হাতের তালুতে জ্বালা, দেহের সমস্ত টিস্যু ও যন্ত্রের ঐ রকম জ্বালা হয় (আর্স, সালফ) বিশেষতঃ স্নায়ু সংক্রান্ত রোগে ঐ জ্বালা অনুভূতি থাকে । রক্তস্রাব প্রবণতা — ছোট ক্ষত হতে প্রচুর রক্ত বার হয় (ক্রিয়ো, ল্যাকে), দেহের সমস্ত শ্লৈষ্মিক ঝিল্লীযুক্ত পথ হতে রক্ত বার হওয়া লক্ষণে উপযোগী । স্নায়বিক দুর্বলতায় সারা দেহ কাঁপতে থাকে দারুণ দুর্বলতা ও অবসন্নতা, জৈব তরল পদার্থের অপচয়ে দুর্বলতা ও ক্লান্তিভাব (চায়না, এসি-ফস)। ব্যথাযন্ত্রণা – তরুণ যন্ত্রণা বিশেষতঃ বুকে হয়। ঐ ব্যথা সামান্য তম চাপ লাগলে বাড়ে, পঞ্জরাস্থির (পঞ্জর+অস্থি) [বুকের খাঁচার হাড়গুলোর মাঝে যে মাংসলস্থান = ইন্টারকস্টাল স্পেস = Iner-costal space] মাঝখানে ও বাদিকে শুলে বুকের যন্ত্রণা হয়— ঐ ব্যথা সামান্য ঠান্ডাতেই বাড়ে খোলা হাওয়া ঐ সময় অসহ্য মনে হয়। মাথা, বুক, পাকস্থলী ও সমস্ত পেটে একপ্রকার দুর্বলতা খালি খালি বোধ অনুভূত হয়। উদাসীনভাব — কথা বলতে চায় না, ধীরে ধীরে উত্তর দেয়, আলসেদের মত নড়াচড়া করে (এসি-ফস)। জীবনযুদ্ধে ক্লান্ত, অবসন্ন— সব সময়ই বিষাদময় আশঙ্কার ভাব প্রকাশ করে । চুল — মাথায় খুসকী, মেঘের মত দলাদলা মত, পড়তে থাকে (লাইকো), গোছ গোছা চুল ওঠে, স্থানে স্থানে টাক পড়ে । চোখ — কোটরাগত, চোখের চারপাশে নীল কালিমা পড়ে। চোখের পাতা ফোলে, ভারীমত, শোথমত হয় (চোখের উপর পাতায় ঐরকম = কেলিকা, চোখের নীচের পাতায় হলে = এপিস)। ঠান্ডা খাদ্য পানীয় খেতে ভালবাসে, পেট ব্যথা আইসক্রিম (বরফ) খেলে কমে। জল খেলে জল পাকস্থলীতে গিয়ে গরম হওয়া মাত্রই বমি হয়ে বার হয়ে যায়, মুখ পুরোপুরি ভর্তি হয়ে যায়। গরম জলে হাত রাখলে গা বমিবমি করে, জলে হাত রাখলে হাঁচি সর্দি হয়। (ল্যাক-ডি) কোষ্ঠকাঠিন্য — মল, সরু, লম্বা, শুকননা, শক্ত ও আঠালো (ষ্ট্যাফিস), ভীষণ কোঁথানি থাকে, মলত্যাগে কষ্ট হয় (কষ্টি)। উদরাময় – রেকটাম অবধি মল আসামাত্র, কলের জলের মত তোড়ে প্রচুর পরিমাণ তরল মল বার হয়, জলের মত তরল মল, সাগুর মত পদার্থ ভাসতে থাকে। মল অসাড়ে বার হয় মলদ্বার যেন খোলা আছে এই রকম অনুভূতি হয় (এপিস), কলেরার প্রাদুর্ভাবে সময় বৃদ্ধদের সকালে উদরাময় লক্ষণে ব্যবহার্য। রক্তস্রাব – বারে বারে প্রচুর পরিমাণে, অবাধে স্রাব হতে থাকে আবার তারপর কিছু সময়ের জন্য বন্ধ হয়। ক্যান্সার রোগে অতিরিক্ত রক্তস্রাব হয়। মুখে রক্ত আসে, মাসিক ঋতুস্রাব বন্ধ হয়ে অন্য পথে যেমন নাক, পাকস্থলী, মলদ্বার, মূত্রপথ এসব হতে রক্তস্রাব (Vicarious) হতে থাকে। বুকে ভারবোধ যেন ভারী কিছু চাপান আছে। গর্ভাবস্থায় – জল খেতে পারে না, জল দেখলেই বমি আসে, স্নান করার সময় চোখ বন্ধ করে দেয় (লিসিনাম)। গলাব্যথা, গলা শুকননো, ঘা মত ব্যথা, গলা যে সেঁচে গেছে, টাটানি ব্যথা—এত ব্যথা যে কথা বলতে পারে না । কাশি – গরম থেকে ঠান্ডা বাতাস লেগে ব্রায়ের বিপরীত), হাসলে, কথা বললে, পড়াশোনা করলে, জলপানে, আহারে, বাঁদিকে শুলে, (ড্রসেরা, স্ট্যানাম) কাশি বেড়ে যায় । ঘামে গন্ধকের গন্ধ ছাড়ে। নীচের চোয়ালে (বাঁদিকে) পচন ধরে। সম্বন্ধ – অনুপূরক—আর্সেনিক, আর্সেনিক সবদিকে (আকৃতি ও প্রকৃতিগতভাবে) এই ওষুধের সমকক্ষ, এলিয়াম সিপা যা এর উদ্ভিজ্জ সমগুণ— ফসফরাসের অনুপূরক ওষুধ। শত্রু সম্বন্ধ—কষ্টিকাম, কষ্টি-র আগে বা পরে কখনই ব্যবহার করা যায় না । আয়োডিন ব্যবহারের কুফল ও অত্যধিক লবণ ব্যবহারের কুফল ফস, দূর করে। ক্যালকে কার্ব ও চায়নার পর.ভাল খাটে। হ্যানিম্যান বলেছেন-“ক্রনিক তরল মলসংযুক্ত উদরাময়ে ফস প্রয়োগে অত্যন্ত ভাল ফল দেয়।” বৃদ্ধি — সন্ধ্যায়, মাঝরাতের আগে (পালস, রাস-ট) বাঁদিকে শুলে বা ব্যথা যে দিকে সেদিকে শুলে, বজ্রবিদ্যুৎ যুক্ত ঝড়বৃষ্টির আগে, আবহাওয়া ঠান্ডা বা গরম যে কোন পরিবর্তনে। ঠান্ডা বাতাসে মাথা ও মুখের উপসর্গের উপশম দেয় কিন্তু বুক, গলা ও ঘাড়ের উপসর্গ বাড়িয়ে দেয়। উপশম — অন্ধকারে, ডানদিকে শুলে, আক্রান্ত স্থান ঘসলে ও সমোহিত করলে, ঠান্ডা খাদ্য বা ঠান্ডা জলপানে যতক্ষণ না পাকস্থলীতে গিয়ে গরম হয় (গরম হলেই বমি হয়ে উঠে যায়) শক্তি- ৩, ৬, ৩০, ২০০ হতে উচ্চতম শক্তি। ডান ফুসফুসের নিম্ন অংশে দারুণ উপযোগী সাধারণতঃ নিউমোনিয়ায় ফুসফুস নিরেট আকার ধারণ করার মুহূর্তে প্রয়োগ কর-ন্যাশ, স্নায়বিক উত্তেজনাবশতঃ জন্ডিস লক্ষণে সবচেয়ে উপযোগী ঔষধ—হেরিং। কিডনী আক্রান্ত ঐ সাথে পাকস্থলী বা ফুসফুস হতে রক্তক্ষরণে অত্যন্ত উপযোগী= ফ্যারিংটন। দাত তোলার পর উজ্জ্বল রক্তস্রাব হলে নিমেষে রক্তস্রাব বন্ধ করে = কেন্ট। মেরুদন্ডের বিভিন্ন উপসর্গে ফসের কথা চিন্তা কর= কেন্ট। |