কঠিন রোগে মস্তিষ্ক আক্রান্ত হয়ে রোগী আচ্ছন্ন ও অচৈতন্য হয়ে পড়ে থাকে। |
ব্যথা ছাড়া রোগের অভিযোগ, শারীরিক প্রতিক্রিয়ার অভাব, ঔষধের যথাযথ ক্রিয়া হয়না। |
কোষ্ঠবদ্ধতার সহিত শক্ত গোলাকার কালো বলের মত মল। |
ভয় পাওয়ার পরে ভয় থেকে যায়। |
ঘুমাতে গেলে শ্বাস বন্ধ হয়ে আসে, শরীর ঝাঁকি দিয়ে আবার শ্বাসক্রিয়া শুরু করে। |
নাক ডাকা, অসম ও গড়গড় শব্দ যুক্ত শ্বাসক্রিয়া। উপযোগিতা — বিশেষভাবে শিশু ও বৃদ্ধদের অসুখে উপযোগী। প্রথম শৈশব (শিশুদের) ও দ্বিতীয় শৈশব (বৃদ্ধাবস্থায়) এর অসুখ (ব্যারা-কার্ব, মিলিফো) উপযোগী। শিশু ও বৃদ্ধ যাদের পাতলা চুল, শিথিল মাংসপেশী ও দৈহিক উত্তেজনা থাকে না এরূপ লোকেদের পক্ষে উপযোগী। ওষুধ সহজে ক্রিয়া করতে পারে না—জৈব প্রতিক্রিয়ার অভাব, ওষুধ সুচিন্তিতভাবে নির্বাচিত হয়েও কাজ করতে পারে না। (কার্ব-ভে, ভ্যালেরি)। রোগের উপসর্গ — কোন রকম অনুভূতি থাকে না ও আংশিক বা সম্পূর্ণ রূপে পক্ষাঘাত অবস্থা—রোগের কারণ-ভয় পেয়ে, ভয় পাওয়ার কুফল ও বহুদিন আগে ভয় পেয়েছে কিন্তু এখনও সেই ভীতি কাটেনি (একোন, হায়স) এইরকম, কয়লার ধোয়া নাকে গিয়ে, মদ্যপায়ীদের অসুখে উপযোগী। সব রোগ লক্ষণের সাথে গভীর নিদ্রা। ব্যথা বেদনা অনুভব হয় না, রোগী কোন কষ্টে অভিযোগ করে না বা কষ্টের জন্য কিছু করতে বলে। খিচুনি—শিশুদের অপরিচিত কেউ আসলে, মা ভয় পেয়ে শিশুকে স্তনদান করলে ঐ শিশুদের (হায়োস)। [মায়ের কোন কারণে রাগ হয়ে শিশুকে স্তনদান করলে খিচুনি-ক্যামমা, নাক্স-ভ], কান্নাকাটির পর খিচুনী হলে ব্যবহার্য। খিচুনীর সময় চোখ অর্ধেক খোলা ও চোখ উল্টে যায়। হাত পায়ে খিচুনীর আগে ও পরে হঠাৎ চিৎকার করে ওঠে (এপিস, হেলিবোর), শ্বাস নিতে ও ছাড়তে গভীর ঘড়ঘড় শব্দ হয়। প্রলাপ – সারাক্ষণ বকবক করে, চোখ বড় বড় মুখ লাল ও মুখ ফোলে বা অচেতন অবস্থা চোখ চকচকে, অর্ধেক খোলা, মুখ ফ্যাকাসে, নিদ্রায় আচ্ছন্ন অথচ জ্ঞান থাকে। মনে করে সে যেন বাড়ীতে নেই (ব্রায়ো), অনবরত এইরকম মনে ভাবে। ঘুমের মধ্যে বিছানার কাপড় খোঁটে (জেগে ঐ রকম = বেল, হায়স) । মাতালের মত বকবক করে—রোগা, শুকিয়ে গেছে এমন বৃদ্ধ যাদের মুখ • ফোলে, আচ্ছন্নভাব, চোখ জ্বালা করে, চোখে গরম ভাব, শুকনো ভাব, ঐস্থানে জোর শব্দে নাক ডাকে—এসব লক্ষণে উপযোগী। ঘুম — গভীর ঘুম, অচৈতন্যের মত ঐসাথে শ্বাস প্রশ্বাসে ঘড়ঘড় শব্দ, মুখ লাল, চোখ আধ বোজা ও আরক্ত, চামড়ায় গরম ঘাম বার হতে থাকে, খিচুনীর পর গভীর ঘুম। ঘুমঘুম ভাব কিন্তু ঘুমাতে পারে না (বেল, ক্যামো), নিদ্রাহীনতা অথচ শ্রবণশক্তি বাড়ে, ঘড়ির টিকটিক শব্দ ও মোরগের কোঁকর কো তাকে ঘুম থেকে জাগিয়ে দেয়। ঘুমিয়ে পড়লে শ্বাসকষ্ট হয় গ্রিন্ডেলিয়া, ল্যাকে। বিছানা এত গরম মনে হয় যে সে শুতে পারে না বিছানা শক্ত মনে হয় (আর্নিকা, ব্রায়ো, পাইরো); ঠান্ডাস্থান খোঁজার জন্য নড়াচড়া করে, গায়ের ঢাকা খুলে ফেলতে বাধ্য হয় । পরিপাক যন্ত্রের অক্ষমতা, অন্ত্রের পেরিসটালটিক গতি বিপরীত ভাবে হয় বা পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে পড়ে অন্ত্রের পথ যেন বন্ধ হয়ে গেছে বলে মনে হয়। কোষ্ঠবদ্ধতা — শিশুদের, মোটাসোটা, নম্র, বিনয়ী মহিলাদের গ্রাফাই; অন্ত্রের নিষ্ক্রিয়তা বা পক্ষাঘাত কারণে মলত্যাগের কোন ইচ্ছা থাকে না, সীসক বিষাক্ততায় কোষ্ঠকাঠিন্য। মল শক্ত, গোল কাল কাল বলের মত (চেলিডো, প্লাম্বাম, থুজা)-মলত্যাগের সময় মল কিছুটা বার হয়ে আবার ভেতরে ঢুকে যায় (সাইলি, থুজা) মল — অসাড়ে হয়—বিশেষতঃ ভয় পেলে (জেল), মল কাল, দুর্গন্ধ মলদ্বারের সঙ্কোচক পেশীর পক্ষাঘাত হয়ে ঐরূপ মল লক্ষণে ব্যবহার্য । মূত্র – প্রস্রাব যেন আটকে গেছে অথচ মূত্রথলী ভর্তি। প্রসবের পর বা অধিক তামাক সেবন করে মূত্র বন্ধ, মায়ের বা স্তনদায়ী ধাত্রীর রোগ হয়ে শিশু ঐ দুধ পান করে প্রস্রাব বন্ধ হয়, জ্বর হয়ে বা তরুণ কোন রোগ হয়ে, মূত্রথলীর পক্ষাঘাত বা মূত্রথলীর সঙ্কোচক পেশীতে পক্ষাঘাত হয়ে প্রস্রাব বন্ধ হলে প্রযোজ্য। (ট্র্যামোনিয়মে প্রস্রাব বন্ধ আছে কিন্তু ওপিয়ামে কিডনী হতে প্রস্রাব হয়ে মূত্রথলীতে জমা হয় অথচ মূত্রথলী পূর্ণ হয়ে গেছে রোগী তা বুঝতে পারে)। ওপিয়াম অন্ত্রকে এতই নিষ্ক্রিয় করে ফেলে যে অত্যন্ত শক্তিশালী বিরেচকও (Purgative) কিছু করতে পারে না = হেরিং। বেশী মাত্রায় ওপিয়ামের ব্যবহারে দীর্ঘস্থায়ী উদরাময় লক্ষণে শক্তিকৃত ‘ওপিয়াম ব্যবহার্য = লিপি। তরুণ চর্মোদ্ভেদ হঠাৎ লোপ পেয়ে মস্তিষ্কের পক্ষাঘাতে তড়কা হলে (জিঙ্কাম) এ ওষুধ উপযোগী। শিশুদের পুঁয়ে পাওয়া–চামড়া কুঁচকে যায়, ভাজ পড়ে দেখে মনে হয় যেন কোন শুকিয়ে যাওয়া, ছোট হয়ে যাওয়া বৃদ্ধ (এব্রোট)। সম্বন্ধ – ওপিয়াম বিষমাত্রায় প্রয়োগ হলে উগ্ৰ কফি, নাক্স-ভ, কেলি পারমাঙ্গানেট দিতে হয় ও রোগীকে অনবরত নড়াচড়া করতে হয়। সদৃশ লক্ষণ শক্তীকৃত ওপিয়াম আফিং বিষাক্ততার কুফল নষ্ট করে। তুলনীয়—এপিস, বেল, হায়াস, ষ্ট্র্যামো ও জিঙ্কাম। বৃদ্ধি – ঘুমের সময় ও ঘুমের পর (এপিস, ল্যাকে)। ঘাম হতে থাকলে, গরমে, উত্তেজক দ্রব্যে। উপশম – ঠান্ডায়, অবিরত হাঁটাচলায়। শক্তি—৩০, ২০০, ০/১ হতে ০/৩০ শক্তি। |