অত্যন্ত শীতকাতর, ঠাণ্ডা বাতাস অসহ্য, জামা কাপড় খোলতে পারেনা। |
বার বার নিস্ফল মলবেগ, পায়খানা করার পর মনে হয় মল রয়ে গেছে, আরও একটু হলে ভাল হত, এ জন্য অনেক সময় ধরে চেষ্টা করে। |
আক্ষেপ ও স্পর্শকাতরতা, শব্দ, আলো, গন্ধ সহ সমস্ত ইন্দ্রিয়ের অতিরিক্ত অনুভূতি, সামান্য রোগেই অত্যন্ত কাতর হয়ে পড়ে। |
অত্যন্ত হিংসুক, বদরাগী ও অধৈর্য, অল্পতেই ভয়ানক রেগে যায়। |
সন্ধ্যার সময়েই অত্যন্ত ঘুম পায়, রাত্রি ২ থেকে ৩ টার সময় ঘুম ভেঙ্গে যাওয়ার পর দুই এক ঘন্টা মনের মধ্যে নানারূপ চিন্তার উদয় হয় এবং আবার ঘুম আসে, বেলা করে ঘুম ভাঙ্গে, ঘুম ভাঙ্গার পর শরীর ক্লান্ত ও খারাপ অনুভূতি হয়। |
টক ও তিতো ঢেঁকুর উঠে এবং সকালে বমি ভাব হয়। |
পাকস্থলীর লক্ষণের সহিত শ্বাসকষ্ট। উপযোগিতা— রোগা চেহারা, মেজাজ খিটখিটে, অতি সাবধানী, হিংসুটে, চুল কালো, পৈত্তিক ও রক্তপ্রধান ধাতু-একটুতেই ঝগড়া শুরু করে দেয়, হিংসুট, মনে বিদ্বেষভাব, স্নায়বিক ও বিষাদগ্রস্ত এমন রোগীদের ক্ষেত্রে উপযোগী। রোগা, খিটখিটে, স্নায়বিক প্রকৃতির অমিতাচারী লোক, যারা অজীর্ণ ও অর্শরোগে ভোগে (ঐ লক্ষণে পাতলা চুল, নীল চোখ রোগীদের= লোবে) তাদের রোগে প্রযোজ্য। “যাদের অদম্য উৎসাহ, খিটখিটে, অধৈৰ্য্য, রাগী, হিংসুটে, প্রতারক (কথায় কথায় মিথ্যা কথা বলে) তাদের রোগে নাক্স-ভ উপযুক্ত ওষুধ”— হ্যানিম্যান মেজাজ খিটখিটে সাথে উদ্বেগ-আত্মহত্যা করতে ইচ্ছা অথচ মরতে ভয় পায়। মিথ্যা রোগ কল্পনা, সাহিত্য রসিক, পড়াশোনা করতে ভালবাসে ও যারা বেশীর ভাগ সময় ঘরে কাটায়, দৈহিক পরিশ্রমের অভাবে হজমের গোলমালে ভোগে, পেটের গোলমালে ভোগে ও কোষ্ঠকাঠিন্যে ভোগে বিশেষতঃ যারা মদ্যপ, তাদের ঐ সব লক্ষণে উপযোগী । অত্যধিক অনুভূতি-বাইরের কোন আলোচনায়, গোলমালে, গন্ধে, আলোতে, গান বাজনায় (নাক্স-ম), সামান্য অসুস্থতায় কাতর হয়ে পড়ে (ক্যামো), নির্দোষ কথাতেই দোষ ধরে (ইগনে) এমন লোকের রোগে উপযোগী । যারা খুব সতর্ক, সাবধানী কিন্তু অল্পতেই উত্তেজিত হয় বা রেগে ওঠে, খিটখিটে ও নাছোড় বান্দা প্রকৃতির তাদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য । কুফল- কফি, তামাক, মদজাতীয় উত্তেজক পানীয়, মশলাদার খাদ্য বা বাসী খাবার খেয়ে, অতি ভোজনে (এ-কুড), বহুক্ষণ বা বহুদিন যাবৎ মানসিক পরিশ্রমে, আলস্যে সময় কাটান, পর্যাপ্ত ঘুম না হলে (ককুলাস, কলচি, এসিনাই), সুগন্ধি দ্রব্য ব্যবহারে, পেটেন্ট ওষুধ (টনিক জাতীয়) খেয়ে, ঠান্ডা সিমেন্ট বা ঠান্ডা পাথরের উপর বসে থেকে যদি গরমকালে হয়—এ সব কারণ থেকে রোগ হলে ব্যবহার্য। যে সকল রোগী মিকচার, তেঁতো ওষুধ, কবিরাজী ওষুধ, টোটকা ওষুধ, হাতুড়ে চিকিৎসা করেছে বিশেষতঃ উগ্রগন্ধযুক্ত বা গরম ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা হয়েছে তাদের ক্ষেত্রে যদি সদৃশ লক্ষণ থাকে তবে নাক্স-ভ একটি উৎকৃষ্ট ওষুধ। হাতপায়ে খিচুনী অথচ জ্ঞান থাকে (ষ্ট্রিকনী) রাগ, আবেগ, ছোঁয়া লাগা বা নড়াচড়ায় বেড়ে যায়। ব্যথাবেদনা – ঝিঁ ঝিঁ ধরে, বিধে যাওয়ার মত দারুণ কনকন করে ব্যথা নড়াচড়ায় ও ছোঁয়া লাগলে বেড়ে যায়। মূৰ্ছা হবার প্রবণতা (নাক্স-ম, সালফ)—গন্ধে, সকালে আহারের পরে প্রতিবার প্রসব বেদনা উঠলে হয়। সন্ধ্যাবেলায় বসে থাকলে বা শোবার আগে কয়েক ঘন্টা যাবৎ পড়াশোনা করে ঘুমে চোখ জড়িয়ে আসে আবার ভোর ৪টা বা ৭টার সময় ঘুম ভেঙ্গে যায়। দুপুরে শুয়ে সন্ধ্যা অবধি দিবা স্বপ্ন দেখে ঘুমায়—কিছুতেই ঘুম থেকে জাগান যায় না-যদি জাগে তবে দুর্বলতা, ক্লান্তি অনুভব করে (পালস্ এর বিপরীত)। সর্দিলক্ষণ- শিশুদের নাক সেঁটে যায় (এমন-কা, স্যাম্বু) সর্দি রাতে থাকে না, দিনে তরলসর্দি ঝরতে থাকে—গরম ঘরে সর্দি বেড়ে যায় ঠান্ডা বাতাসে কমে। ঠান্ডা স্থানে, ঠান্ডা পাথরের সিড়িতে বসে থেকে সর্দি হলে উপযোগী। উদ্গার – টক, তিতাস্বাদ, মানসিক উদ্যমহীনতা ঐ সাথে প্রতিদিন সকালে গা বমিবমিভাব ও বমি হয়। খাওয়ার পরে ঢেকুর ওঠে । গা বমিবমিভাব — সব সময় হতে থাকে, আহারের পরে, সকালে হয়, ধূমপান করলেও বমি করতে পারলে ভাল হতো” এই রকম মনে হয়। পাকস্থলী আহারের এক বা দুঘন্টা পরে পাকস্থলীতে পাথরচাপার মত চাপ অনুভূত হয় (আহারের ঠিক পরেই ঐ লক্ষণে = কেলি-বাই, নাক্স-ম) গলা বেয়ে জল ওঠে, পাকস্থলীতে টানবোধ-কোমরের কাপড় ঢিলা করতে হয়, আহারের পর ২/৩ ঘন্টা যাবৎ কোন মানসিক পরিশ্রমের কাজ করতে পারে। মানসিক উদ্বেগ, দুঃখ, ব্রান্ডি খেয়ে, কফি বা ওষুধ খেয়ে, রাত জেগে ও ভোগবিলাসে দিন যাপন করে পাকস্থলীর ঐ অবস্থা হলে উপযোগী। কোষ্ঠকাঠিন্য — বারে বারে পায়খানায় যেতে ইচ্ছা করে, মলত্যাগে তৃপ্তি হয় না, অল্প মলত্যাগ হয় (উপর পেটে অস্বস্তির সাথে ঐরূপ লক্ষণে = ইগনে, ভিরেট্রাম), যেন সবটা মল বার হল না এইরকম মনে হয়, বারে বারে পায়খানায় যেতে ইচ্ছা করে সাথে মানসিক অস্বস্তি, নিস্ফল মলবেগ—মলত্যাগ হলে কিছুক্ষণের জন্য ঐভাব কমে, সকালে ঘুম থেকে উঠলে, মানসিক পরিশ্রমের পরে ঐরূপ নিস্ফল মলবেগ (অন্ত্রের নিষ্ক্রিয়তা-মলত্যাগের কোন ইচ্ছাই থাকে না ব্রায়ো, ওপি, সালফ) হলে ব্যবহার্য যারা সারা জীবন ধরে বিরেচক (Purgative) ওষুধে অভ্যস্ত তাদের একবার কোষ্ঠকাঠিন্য আর একবার উদরাময় হতে থাকলে এ ওষুধ উপযোগী । ঋতুস্রাব – নির্দিষ্ট সময়ের অনেক আগে, প্রচুর পরিমাণে, অনেকদিন ধরে হতে থাকে বা স্রাবের আগে ও পরে অসুস্থতা সহ বেশীদিন স্থায়ী হয়, প্রতি দুসপ্তাহ বাদে বাদে, অনিয়মিত, কখনই নির্দিষ্ট সময়ে হয় না, হতে হতে বন্ধ হয়, থেমে আবার শুরু হয় (সাল)। ঋতুস্রাবের সময় ও পরে পুরাণ লক্ষণগুলো ফিরে আসে প্রসব বেদনা – ভয়ঙ্কর বেদনা, আক্ষেপজনক বেদনায় মলমূত্র ত্যাগের বেগ চাপে। ঐ বেদনা পিঠে বেশী হয়, ঐ সময় গরম ঘরে থাকতে চায়, অন্ত্র অবরুদ্ধ হয়ে নাভীস্থানের হার্নিয়া হলে উপযোগী । পিঠে ব্যথা — ঐ ব্যথায় শোয়া অবস্থায় পাশ ফিরতে গেলে প্রথমে উঠে বসতে হয়। ধাতুদৌর্বল্য ও হস্তমৈথুন করে কোমরে বাত হলে ব্যবহার্য, ঠান্ডা বা ঠান্ডা বাতাস এড়িয়ে চলে সামান্য নড়াচড়ায়, গায়ের ঢাকা খুললে শীতবোধ জ্বরের-শীত, তাপ, ঘর্ম, প্রতি অবস্থাতেই গায়ে অবশ্যই ঢাকা দিতে হয়। জ্বরলক্ষণ – প্রচন্ড উত্তাপ সারা গায়ে আগুনের মত উত্তাপ, জ্বালা হয় (একোন), মুখ লাল ও গরম (বেল) তবুও রোগী নড়াচড়া করলে বা অনাবৃত হলেই শীতবোধ করে। সম্বন্ধ – সালফার প্রায় সব রোগেই অনুপূরক । শত্রু সম্পর্ক – জিঙ্কাম, কখনই এর আগে বা পরে ব্যবহৃত হয় না, আর্স, ইপি, ফস, সিপিয়া, সালফের পর ভাল খাটে । রাতে শুতে যাবার আগে নাক্স দিলে ভাল হয়, সবচেয়ে ভাল হয় যদি শুতে যাবার কয়েক ঘন্টা আগে দিতে পারলে। শরীর ও মন যখন বিশ্রাম নিতে থাকে তখন প্রয়োগ করলে সবচেয়ে ভাল ফল দেয় । বৃদ্ধি — সকালে ভোরে ৪টায় ঘুম ভেঙ্গে, মানসিক পরিশ্রমে, খাওয়ার পরে বা বেশী খেয়ে, ছোঁয়া লাগলে-গোলমালে, রাগ হলে, মশলা বা নেশার জিনিষ খেয়ে, শুকনো জলবায়ুতে, ঠান্ডা বাতাসে । উপশম- সন্ধ্যাবেলায়, বিশ্রামে শুয়ে থাকলে ও স্যাঁৎসেঁতে ভেজা আবহাওয়ায় (কষ্টি)। শক্তি – নিম্ন হতে উচ্চশক্তি, ০/১ হতে ০/৩০ শক্তি । |