বিমর্ষ, খিটখিটে, সকালেই মেজাজ বেশী খারাপ থাকে, কথা বলতে ইচ্ছা করে না বা কারো কথা শুনতে চায় না, স্ফূর্তিজনক গান বাজনায় বিষণ্ণ হয়ে পড়ে। |
আদ্র আবহাওয়া, আদ্র ঘর, ভূগর্ভস্থ ঘরে বৃদ্ধি। |
জিহ্বায় বাদামী বর্ণের ময়লা ও তিতা স্বাদ। |
জামা খুললে পা চুলকায়। |
মাথায় আঘাত লাগার ফলে মানুষিক অসুস্থতা। উপযোগিতা — ভেজা অবস্থায় বাড়ে স্যাঁৎসেঁতে বা মাটির তলার ঘরে বাস করে যে সব রোগ বেড়ে যায় সেক্ষেত্রে উপযোগী (এরানিয়া)। শুকনো আবহাওয়া হতে ভেজা আবহাওয়া এই পরিবর্তন হলেই অসুস্থ হয়ে পড়ে সমুদ্রের বাতাস সহ্য হয় না জলের পাশে যে সব গাছপালা বা শাকসজী হয় সেগুলো খেলে অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং যাদের দেহে গণোরিয়া বিষ মারাত্মক রোগ লক্ষণের সৃষ্টি করে ও যে কোন রোগ হতে ধীরে ধীরে আরোগ্য হয় সেক্ষেত্রে উপযোগী । প্রতি বসন্তেই চর্মরোগের লক্ষণ দেখা দেয় (সোরিন) চিন্তা করতে অক্ষম (নেট-কা)। দুঃখিত, বিষন্ন, খিটখিটে ঐ ভাব সকালেই বেশী, কথা বলতে ভালবাসে বা কেউ কথা বলুক তাও চায় না (আয়োড়ি, সাইলি)। হতাশাগ্রস্ত, ভাল গান বাজনাও তাকে নন্দ দেয় না, জীবন সম্বন্ধে বিতৃষ্ণা—নিজেই নিজেকে গুলি করে আত্মহত্যার ইচ্ছা অতি কষ্টে সংযত করে । মস্তিষ্কে আঘাত লেগে রোগ-মানসিক ভাবে আঘাত বা পড়ে গিয়ে বা আঘাত লেগে মাথার কোন রোগে প্রযোজ্য। চোখের পাতায় দানাদানামত মাংস গজায় সেগুলি ছোট ছোট ফুফুরীর। মত দেখতে (থুজা) তাতে সবজে পুঁজ হয়, আলোর দিকে তাকাতে পারে না গণোরিয়া হয়ে বা সাইকোসিস রোগ বীজ হতে এইরূপ হয়। ঋতুবন্ধ কালে নাক দিয়ে রক্ত পড়ে (ঋতুস্রাবের পরিবর্তে ঐরূপ হলে = ব্রায়ো, পাস) দাঁতে যন্ত্রণা-ঠান্ডা জল দিলে বা ঠান্ডা বাতাসে উপশম হয় (কফিয়া, পালস)। নোংরা — সবজে ধূসর বা বাদামী রঙের লেপ থাকে দাঁতে। উদরাময় – হঠাৎ বেগ আসে, তেড়ে পিচকারীরমত বার হয়, মল এর সাথে প্রচুর বায়ু বার হয়, ঘুম থেকে উঠেও উঠে দাঁড়ালে মলত্যাগের বেগ আসে, আবহাওয়া কয়েকদিন যাবৎ স্যাঁৎসেঁতে থাকলে, স্যাঁৎসেঁতে ঘরে বাস করলে বা মাটিতে দাড়িয়ে কাজ করলে উদরাময় দেখা দেয়। গণোরিয়া — স্রাব সবজে হলুদ, কোন যন্ত্রণা থাকে না। স্রাব ঘন (পালস) বহুদিনের পুরান রোগ বা গণোরিয়া স্রাব চাপা পড়ে কোন অসুখ হলে প্রযোজ্য। শ্বাসকষ্ট — স্যাঁৎসেঁতে মেঘাচ্ছন্ন আকাশ হলে জোরে শ্বাস নিতে চায়। হাঁপানি – শিশুদের হাঁপানি ভেজা আবহাওয়ায় প্রতিবার জলহাওয়াযুক্ত আবহাওয়ার পরিবর্তনে হাঁপানির আক্রমণ হয়। নতুন করে ঠান্ডা লাগলেই হাঁপানি হয়, হাঁপানি প্রতিবারই বর্ষাকালের ভেজা জলবায়ুতে বৃদ্ধি পায়। শ্লেষ্মা সবজে বা সবুজ, প্রচুর পরিমাণে বার হয় (সবজে ধূসর = কোপেইভা) সাইকোসিস দোষ হতে নিউমোনিয়া বা ফুসফুসের নিচের দিকটা (lobe) আক্রান্ত হয়। ভয়ানক টাটানি ব্যথা থাকে বুকে-কাশতে গেলে বিছানায় উঠে বসতে হয় ও দুহাতে বুক চেপে ধরে (নিকোলাস) ডান ফুসফুস এ লক্ষণে = ব্রায়ো। মস্তিষ্ক ও মেরুদন্ডের স্নায়ু প্রদাহ-মস্তিষ্কের তলার দিকে (Base of brain পিষে ফেলা মত চিবিয়ে কামড়ান মত ভয়ানক যন্ত্রণা, মাথা পেছনে হেলে পড়ে মানসিক উত্তেজনা ও প্রলাপ বকার সাথে দেহে খিচুনি হতে থাকে মাথায় অত্যন্ত রক্ত সঞ্চয় হয়–দেহ ধনুষ্টঙ্কারের মত পেছনে বেঁকে যায় (Opisthotonos)। সম্বন্ধ – নেট-মি ও সালফের সাথে তুলনীয় যেগুলো প্রায় একই ধরনের লক্ষণ দেয়, জলীয় হাওয়ায় রোগলক্ষণের বৃদ্ধি (Hydrogenoid) এই ধাতুর লোলাকেদের সিফিলিস বা সাইকোসিস দোষ থেকে উদ্ভূত রোগে থুজা ও মার্কএর সাথে তুলনীয়। বৃদ্ধি — স্যাঁৎসেঁতে মেঝে বা স্যাঁৎসেঁতে স্থানে বাস করলে, ভেজা আবহাওয়ায় (এ্যারানিয়া, আর্স-আয়োড, ডালকা), বিশ্রামে বা শুলে বাড়ে। উপশম — শুকনো আবহাওয়ায়, চাপ দিলে, উঠে বসলে (কাশি), অবস্থান পরিবর্তন করলে (কিন্তু ভেজা জলবায়ুতে উপশম = কষ্টি) খোলা বাতাসে। রোগী অবস্থান পরিবর্তন বারে বারে করতে থাকে তবে তাতে কষ্ট বাড়ে সামান্য মাত্রই আরাম পায় (কষ্টি)। শক্তি — ৬, ৩০, ২০০ হতে উচ্চশক্তি, ০/১ হতে ০/৩০ শক্তি। (নিউমোনিয়া = Pneumonia -ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস ও রাসায়নিক উত্তেজক পদার্থের দ্বারা ফুসফুসের প্রদাহ হয়ে নিউমোনিয়া হয়। নিউমোকক্কাই, স্ট্যাফিলোকক্কাই, ইত্যাদির সংক্রমণে হয়। শীতভাব, জ্বরের তাপমাত্রা অধিক, বুকে ব্যথা, কাশি পুঁজযুক্ত বা রক্তের ছিটযুক্ত থুথু বার হয়। সুচিকিৎসা না হলে মৃত্যুহার অত্যধিক। প্রায় 50 প্রকারের নিউমোনিয়া হয়ে থাকে। স্বাভাবিক অবস্থায় ফুসফুস স্পঞ্জের মত নরম থাকে কিন্তু নিউমোনিয়া হলে ফুসফুস শক্ত নীরেট হয়ে পড়ে। অবস্থানুযায়ী সাধারণতঃ তিন প্রকারের নিউমোনিয়া হয়। (A) সেকেণ্ডারী বা গৌণ—অন্য কোন রোগের উপসর্গে যেমন টাইফয়েড বা অন্য কোন রোগ আগে থেকে হয়ে তার পরবর্তী উপসর্গরূপে। (B) লোবুলার ক্যাটারাল বা ব্রঙ্কো-নিউমোনিয়া-ব্রঙ্কাইটিস, হাম, ইনফ্লুয়েঞ্জা, হুপিং-কাশি, ডিপথেরিয়া ইত্যাদি রোগের উপসর্গে হয়। ফুসফুসের যে কোন অংশে বা সবটাতেই ডানদিকে বা বাদিকে বা দুদিকেই আক্রান্ত হতে পারে ফুসফুসের পাঁচটি Lobe অথবা অংশ। ডানদিকে ৩টি বাদিকে ২টি। এই সময় ফুসফুসের দুদিক আক্রান্ত হলে ডবল নিউমোনিয়া বলে। মস্তিষ্ক লক্ষণ যদি প্রথম হতেই দেখা দেয় ও সাথে হাতপায়ে খিচুনী, বিকার, অচেতন ভাব দেখা দিলে পরিণাম ফল ভাল নয় বুঝতে হবে, জ্বরের তাপ যদি 104° বা 105° ডিগ্রি হতে হঠাৎ 95°/96° তে নেমে আসে তবে তাকে নিউমোনিক ক্রাইসিস (Pneumonic Crisis) বলে—এটা খুবই ভয়ের কারণ তা থেকে হার্টফেল হয়ে রোগী মারা যেতে পারে। নিউমোনিয়ার সাথে পুরা আক্রান্ত হলে ফ্রিকসন সাউন্ড পাওয়া যাবে তাকে পুরো নিউমোনিয়া (pluro) বলে। লোরলার = কোন ললাবের ক্ষুদ্র সামান্য অংশে আক্রান্ত হয়। (C) লোবার (Lobar) নিউমোনিয়া—ফুসফুসের কোন লোব বা সমগ্র লোব আক্রান্ত হয়। হোমিও ওষুধ – সদৃশ লক্ষণে (A) প্রথম অবস্থায়—একোন, ভিরেট্রামতি; সালফ। (B) রোগলক্ষণ সুস্পষ্ট অবস্থায় ব্রায়ো, ফস, আয়োডি, স্যাঙ্গুনে, মার্কস, এ-টার্ট, সালফ, চেলিডো। C) হার্ট-ফেল হবার মত হলে—ক্যাকটা, স্ট্রোপেন্থাস, ডিজিটে, ক্র্যাটি, ল্যাকে, ন্যাজা ইত্যাদি। (D) নিউমোনিয়া ও টাইফয়েড একসাথে — ব্যাপটি, রাস-ট, আর্স, ওপি, ফস, কার্বভে। (E) শ্বাসকষ্ট অত্যধিক – গ্রিভেলিয়া, কার্বো-ভে ইত্যাদি। (F) ক্রনিক অবস্থায় — আর্স-আ, ক্যাল-আয়োড। লাইকো, কেলি-কা, সাইলি, সালফ ইত্যাদি। (G) ডান ফুসফুস আক্রান্ত — এ-টার্ট, চেলিডো, লাইকো, মার্ক-স, স্যাঙ্গুনে, সেনেগা। (H) বাঁদিক সাল। |