বিমর্ষ, সা্মান্য কারণে কেঁদে ফেলে, সান্ত্বনা দিলে দুঃখ উথলে উঠে, সান্ত্বনায় রোগের বৃদ্ধি। |
চোখ হতে পানি পড়ে, মাথা ব্যথার সহিত চোখ দিয়ে পানি পরে, পড়ার সময় বা চোঘের সূক্ষ্ম কাজ করলে মাথা ব্যথা ও চোখের লক্ষণ বৃদ্ধি। |
হাঁসি দিলে চোখ দিয়ে অশ্রুপাত হয়। |
সর্দি প্রবণ, একটু ঠান্ডা বাতাস লাগলে সর্দি লাগে। |
শরীরের অন্যান্য অংশের চেয়ে গলা বেশী শীর্ণ হয়। |
লবণ ও লবণাক্ত খাদ্যে আগ্রহ, রুটি তেল ঘিতে অনিহা। |
নখকুণি হওয়ার প্রবণতা, নখের চারিধারের চামড়া খশখশে। |
মুখমন্ডল তৈলাক্ত, নীচের ঠোঁটের মাঝখানে ফাটা, ঘাম শুকালে লবণের মত জমে। |
কোন লোক কাছে থাকলে প্রস্রাব করতে পারে না। |
চোর ডাকাতের স্বপ্ন দেখে, জাগ্রত হয়ে বাড়ি তল্লাসি করে। উপযোগিতা— অত্যধিক রজোস্রাব হয়ে, বীর্যক্ষয় হয়ে বা মানসিক রোগে জৈব তরল পদার্থ নষ্ট হয়ে রক্ত শূন্যতা ধাতুবিকৃতি হলে এ ওষুধ উপযোগী। শরীর ভীষণ ভাবে শুকিয়ে যায়—খাওয়া দাওয়া ভালভাবে করা সত্ত্বেও দেহে মাংস লাগে না । (এব্রোটে, আয়োডাম)—গ্রীষ্মকালীন রোগের উপসর্গে শিশুদের ঘাড় ও গলা দ্রুত শুকাতে থাকে (স্যানিকি)। একটুতেই ঠান্ডা লাগে (ক্যালকে-কা, কেলি-কা) খিটখিটে মেজাজ—কিছু বললে শিশু রেগে ওঠে, সামান্য কারণে কাঁদতে থাকে সামান্য ব্যাপারে ভীষণ রেগে যায় বিশেষ করে আদর করলে বা সান্ত্বনা দিলে আরও বেশী রেগে যায় । আনাড়ী, তাড়াহুড়ো করে, স্নায়বিক দুর্বলতার জন্য হাত থেকে জিনিস পত্র পড়ে যায় (এপিস, বোভিষ্টা) । একটুতেই কেঁদে ফেলে, অকারণে বিষন্নমনে কাঁদতে থাকে (পালস্), কিন্তু অন্য কেউ আদর করলে বা সান্ত্বনা দিলে কান্না আরও বেড়ে যায় । মাথা যন্ত্রণা— রক্তশূন্যতার জন্য স্কুলের বালিকাদের (ক্যালকে-ফস) মাথাযন্ত্রণা। সূর্যোদয় হতে সূর্যাস্ত পর্যন্ত, মাথার বাদিকে নির্দিষ্ট একটি স্থানে পেরেক বিধে থাকার মত ব্যথা হয় যেন মাথা ফেটে যাচ্ছে ঐ সাথে মুখ লাল, যন্ত্রণা শুরুর আগে গা বমিভাব ও বমি হয়, ঋতুস্রাব শুরুর আগেও ঐ সময় মাথা যন্ত্রণা হয়— যেন হাজার হাজার ছোট হাতুড়ী দিয়ে মস্তিষ্কে আঘাত করা হচ্ছে এই রকমটা জ্বর হলে হয়, ঘাম হলে মাথা যন্ত্রণা কমে যায় । মাথা যন্ত্রণা— শুরু হবার আগে চোখে অন্ধকার দেখে (আইরিস-ভা, কেলি-বাই) চোখের সামনে বিদ্যুৎ চমকানোর মত আঁকাবাঁকা ঝলকানি দেখা দেয় দপদপানি যন্ত্রণা হয়ে মাথাযন্ত্রণা শুরু হয়। চোখের অতিরিক্ত পরিশ্রমে মাথা যন্ত্রণা হলে ব্যবহার্য । চোখ দিয়ে জল গড়ায়—কাশি দিলে গাল বেয়ে চোখের জল পড়তে থাকে (ইউফ্রে)। হে-ফিভার নাক সুড়সুড় করে যেন পোকা হেটে বেড়াচ্ছে রোদের তাপ লেগে বা গ্রীষ্মের গরমে ঐ রকম হয়, জিবে চুল জড়িয়ে আছে মনে হয় (সাইলি)। জিব—মানচিত্রের মত ফাটা ফাটা মাঝে মাঝে দ্বীপের মত সাদা সাদা তালি—জিবের ধারগুলোতে দাদের মত দাগ (আর্স, ল্যাকে, মার্ক, এসি-নাই, টেরাক্সেকাম) । ভারী জিব কথা বলতে কষ্ট হয়, বাচ্চাদের হাটা শিখতে দেরী— এসব লক্ষণে উপযোগী। কোষ্ঠবদ্ধতা — মলদ্বার যেন ছোট হয়ে গেছে— মলত্যাগের পর মলদ্বার ছিড়ে যায়, রক্ত পড়ে, টনটন করে, যন্ত্রণা হয়। মল শুকনো, শক্ত মলত্যাগে কষ্ট হয়, মল ভেঙ্গে পড়ে (এমন-কা, ম্যাগ-মি)। মলদ্বারে ছুঁচ ফোটানো যন্ত্রণা (এসি-নাই)। অসাড়ে মলত্যাগ লক্ষণ থাকে, বুঝতে পারে না মল বের হল না বায়ু বের হল (এলো, আয়োডি, এসি-মি, ওলিয়েন্ডার, পড়ো) । প্রস্রাব – হাঁটতে গেলে, কাশি দিলে, হাসি দিলে অসাড়ে প্রস্রাব হয় (কষ্টি, পালস, স্কিলা)—কাছে লোকজন থাকলে প্রস্রাবের জন্য অনেকক্ষণ অপেক্ষা করতে হয় (হিপার, এসি-মি), প্রস্রাবের পর মূত্রপথে জ্বালা করে (সার্সা)। বীর্যপাত— সঙ্গমের পরেই সঙ্গমেচ্ছা বেড়ে গিয়ে বীর্যপাত হয়। সঙ্গমের সময় বীর্যপাত না হয়েই লিঙ্গ শিথিল হয়ে আসে, অতিরিক্ত যৌনকার্য করে ধ্বজভঙ্গ, মেরুদন্ডে উত্তেজনা, পক্ষাঘাত এসব লক্ষণ দেখা দিলে এ ওষুধ উপযোগী। প্রতিদিন সকালে মহিলাদের জননেন্দ্রিয়ের বাইরের দিকে চাপমত যেন কিছু বেরিয়ে আসবে এই অনুভূতি থাকে— জরায়ু বার হওয়া রোধ করতে অবশ্যই বসে পড়তে বাধ্য হয় (লিলি-টি, মিউরেক্স, সিপিয়া) । দুর্বলতা ওমছাভাবের সাথে হৎপিন্ড লাফাতে থাকে শুয়ে থাকলে ঐভাব বেশী হয় (ল্যাকে)। হৃৎপিন্ডের স্পন্দনে সারা দেহ কাঁপতে থাকে (স্পাইজে)। যে সব মায়েরা শিশুদের দুধ খাওয়ান তাদের চুলে হাত দিলেই চুল উঠে আসে (সিপিয়া) তাদের মুখ তেলতেলে, চকচকে যেন চর্বির্নখান হয়েছে (প্লাম্বাম, থুজা) । রাগ হতে (তার প্রতি কোন অপরাধ হয়ে থাকলে তা থেকে) টক খাদ্য, রুটি, কুইনাইন খেয়ে, অতিরিক্ত লবণ খেয়ে, সিলডার নাইট্রেট দিয়ে কোন ক্ষত পুড়িয়ে দিয়ে, শোক দুঃখ পেয়ে, ভয় পেয়ে, বিরক্ত হয়ে, অপমান বোধ থেকে বহুদিনের অসন্তোষ জমা হয়ে তার কুফল থেকে রোগ হলে এ ওষুধ ব্যবহার্য (স্ট্যাফিস) নখকুনি হয়— নখের চারদিক শুকনো ও ফাটাফাটা (গ্র্যাফা, পেট্রল), মলদ্বারের চারদিক ও ঘাড়ের পাশে চুলের কাছে দাদের মত উদ্ভেদ দেখা দিলে এ ওষুধ উপযোগী। (হাঁটুর ভাজে ঐরূপ হলে হিপার, গ্রাফাই) । হাতের তালুতে আঁচিল (ঐ যদি ছোয়া লাগলে টাটানি ব্যথা হয়—নেট-কা) । স্বপ্ন – বাড়ীতে ডাকাত পড়েছে এই স্বপ্ন দেখে জেগে উঠে যতক্ষণ না সব দিক তল্লাসী করে ততক্ষণ বিশ্বাস করতে চায় না (সোরিন) ভীষণ জলতৃষ্ণা পেয়েছে এই স্বপ্ন দেখে। ঠোটে মুক্তার মত জ্বরটোসা বার হয়। ঠোট শুকনো, ঠোটে টাটানি ব্যথা, ঠোট ফাটা ফাটা ঠোটে ঘা হয় (এসি-নাই)। হ্যামস্ট্রিং পেশী টেনে ধরে, অত্যন্ত যন্ত্রণা হয় (এম-মি, কষ্টি, গুয়াইকা) । লবণ খাওয়ার অত্যন্ত স্পৃহা (ক্যালকে-কা, কষ্টি), রুটি খেতে অত্যন্ত অনীহা । একজিমা – কাঁচা, লাল, প্রদাহ হয় বিশেষতঃ চুলের গোড়ায় একজিমা একজিমা অত্যধিক লবণ খেয়ে, সমুদ্রতীরে বাস করলে অথবা বেড়ালে বেড়ে যায় । আমবাত নূতন বা পুরান। সারা দেহে বিশেষ করে অত্যধিক পরিশ্রম করলে দেখা দেয় (এপিস, ক্যালকে কা, হিপার, স্যানিকি, আর্টিকা, ইউরেন্স) । সবিরাম জ্বর — সকাল ১০ টা বা ১১ টায় বৃদ্ধি, বহুদিনের পুরান, কুচিকিৎসিত জ্বর বিশেষতঃ কুইনাইন খেয়ে চাপা পড়ে সবিরাম জ্বর হলে ব্যবহার্য। ঐ জ্বরের সাথে শীত ও উত্তাপ অবস্থায় অচেতনভাব সহ মাথা যন্ত্রণা ঐ মাথা যন্ত্রণা ঘাম হলে কমে । সম্বন্ধ — এপিস-এর অনুপূরক এপিসের আগে বা পরে ভাল কাজ দেয়। ট্টোমের উদ্ভিজ্ সমগুণ ইগ্নেসিয়া লক্ষণের ক্রনিক অবস্থায় নেট-মি প্রযোজ্য, নেট-মির পরে সিপিয়া ও থুজা ভাল ফল দেয়। ক্রনিক রোগে নেট-মি বারে বারে প্রয়োগ করা উচিত নয়। মাঝে লক্ষণ সাদৃশ্যে অন্তর্বর্তী ওষুধ দিতে হয়। জ্বরের বৃদ্ধি অবস্থায় এ ওষুধ দেওয়া চলবে না । নেট্রাম প্রয়োগের পর যদি মাথাঘোরা, মাথা যন্ত্রণা ও অবসন্নতা না কাটে তবে নাক্স-ভ দিলে উপশম হয় । বৃদ্ধি— সকাল ১০টা বা ১১টায়, সমুদ্রতীরে বা সমুদ্রের বাতাস লেগে, রোদ বা ষ্টোভের উত্তাপে, মানসিক পরিশ্রমে, কথা বললে পড়ালেখা করলে, শুয়ে থাকলে । উপশম— খোলা বাতাসে, (এপিস, পালস) ঠান্ডা জলে স্নানে, উপবাসে ডানদিকে শুলে (বেদনাযুক্ত পাশে শুলে উপশম =ব্রায়ো, ইগনে, পালস) । |