অত্যন্ত বাচাল, আনন্দ প্রিয়, ঠাট্রা প্রিয়, মহান ব্যাক্তি হওয়ার অনুভূতি, ঈর্ষাপরায়ণ, সন্দেহবাতিক, ক্রমাগত কথা বলে, গান গায় ও শীষ দেয়, অপকার করার ইচ্ছা, প্রতিহিংসাপ্রবণ, থুথু দেয়, উপহাস করে, তার উপর কর্তৃত্ব সহ্য করতে পারেনা। |
মানসিক ও শারীরিক সকল সমস্যা নিদ্রার সময় ও পরে বৃদ্ধি, ঋতুস্রাব শুরু হলে উপশম। |
চামড়ায় অত্যন্ত স্পর্শকাতরতা, সামান্য স্পর্শও অসহ্য, বিশেষ করে গলায়। |
রোগ বাম দিকে আরম্ভ হয়ে ডান দিকে যায়। |
সময়ের গোলমাল অনুভূত হয়, সকালকে বিকাল মনে হয়। |
কঠিন জিনিসের চেয়ে তরল পদার্থ গিলতে কষ্ট, শুধু ঢোক গিলতে আরও বেশী কষ্ট। উপযোগিতা— মুখে চোখে বিষন্নতার ছাপ অল্প হলেও আছে, চোখ কাল, উৎসাহশূন্য ও আলসে প্রকৃতির রোগীর ক্ষেত্রে উপযোগী । পিত্তপ্রধান মহিলাদের দেহে তিল ও আঁচিল থাকে, চুল লাল (ফস) এমন ক্ষেত্রে উপযোগী । মোটাসোটা লোক অপেক্ষা যারা রোগা, দেহ শুকিয়ে গেছে তাদের বেশী প্রয়োজন হয়, যারা রোগে ভুগে দৈহিক ও মানসিক উভয়দিকেই পাল্টে গেছে তাদের পক্ষে উপযোগী। রজোনিবৃত্তি সময়ে বিভিন্ন অসুখ হয়—অর্শ, রক্তস্রাব, চোখ মুখে যেন আগুনের হল্কা লাগার মত ও গরম ঘাম বার হয় । মাথার ঠিক ওপরে জ্বালা, মাথা যন্ত্রণা বিশেষতঃ রজোনিবৃত্তি সময়ে বা তারপরে দেখা দিলে ব্যবহার্য (স্যাঙ্গুইনে, সালফ)। দীর্ঘদিনের শোক, দুঃখ, ভয়, রাগ, ঈর্ষা বা প্রেমে হতাশা এসব থেকে রোগ হলে প্রযোজ্য (অরাম, ইগ্নে, এসি-ফস)। রজোনিবৃত্তি কালের রোগ থেকে আর সেরে ওঠেন নি—“সেই সময় থেকে আর কখনও ভাল বোধ করেন নাই এমন মহিলাদের ক্ষেত্রে উপযোগী । প্রধানতঃ দেহের বাঁদিকে আক্রান্ত হয় রোগ লক্ষণ বাঁদিকে শুরু হয়ে ডানদিকে আক্রান্ত হয়, বা ডিম্বকোষ, বা অন্ডকোষ, বুকের বাঁ দিকে অসুখ হলে প্রযোজ্য । গলায়, পাকস্থলীতে, তলপেটে অত্যন্ত স্পর্শকাতরতা। গলায় বা পেটে বিছানায় চাদর বা ডেপোষাকের ছোঁয়াও সহ্য করতে পারে না। এপিস ও বেলাডোনাতে যেরূপ ব্যথা যন্ত্রণায় অত্যনুভূতি থাকে সেরূপ এতে নাই তবে কাপড়ের ছোঁয়ায় সে অস্বাচ্ছন্দ বোধ করে, তাকে স্নায়বিক করে তোলে । ঘাড়ে বা কোমরে কোন আটোসাটো বাধন সহ্য করতে পারে না । অতিরিক্ত শীত বা অতিরিক্ত গরমে অত্যন্ত দুর্বলতা বোধ করে । মাতালদের মাথায় রক্ত সঞ্চয়জনিত মাথাযন্ত্রণা ও অর্শরোগে ও চর্মে ইরিসিপেলাস হলে ও সন্ন্যাস রোগ হলে প্রযোজ্য। মাথাযন্ত্রণা – দুইকানের পাশে (Temple) চেপে আছে এমন, ফেটে যাচ্ছে এমন যন্ত্রণা হয়-নড়াচড়ায়, চাপ দিলে, সামনে ঝুঁকলে, শুয়ে থাকলে ও ঘুমের পরে ঐ যন্ত্রণা বাড়ে। ভয়ে ঘুমাতে যায় না কারণ ঘুম ভাঙ্গলেই মাথাযন্ত্রণা শুরু হবে । মাথায় রক্ত যেন ঠেলে ওঠে, মদ খেলে মানসিক আবেগে, ঋতুস্রাব চাপা পড়ে বা অনিয়মিত হয়ে, রজোনিবৃত্তি সময়ে ঐরূপ মাথাযন্ত্রণা হয়। বাঁদিকের সন্যাস রোগ হলে ব্যবহার্য। মাথার ওপরে চাপ ও ভারবোধ (সিপিয়া), মাথার পিছনে সীষার মত ভারবোধ । এ সব লক্ষণ বিশেষতঃ মানসিক লক্ষণ ঘুমের পর বাড়ে বা ঘুমের মধ্যেই বেড়ে গিয়ে ঘুম থেকে জাগিয়ে তোলে, বৃদ্ধি অবস্থাতেই ঘুমিয়ে পড়ে । অসুখী যেন যাতণা গ্রস্ত, উদ্বিগ্ন, দুঃখিত—ঘুম থেকে জেগে উঠলে ঐ অবস্থা বেড়ে যায়। মানসিক উত্তেজনা, উল্লাস করে ঐ সাথে ভবিষ্যৎ বক্তার মত ভবিষ্যদ্বাণী করে, কল্পনাশক্তি প্রবল, অত্যন্ত বকবক করে (এগারি,), সবসময়ই কথা বলা চাই, এক বিষয়ে কথা বলতে বলতে অন্য বিষয়ে চলে যায়। একটা কথা বলেই অন্য বিষয়ের গল্প করতে থাকে। কোষ্ঠবদ্ধতা — অন্ত্রের নিষ্ক্রিয়তা-রেকটামে মল জমে থাকে, কোন বেগ হয় না, মলদ্বার পেশীতে যেন সঙ্কোচন বোধ (কষ্টি, এসিড-নাই)। ঋতুস্রাব – নির্দিষ্ট সময়েই হয় । পরিমাণে খুবই অল্প, কম সময় থাকে। ঋতুস্রাব হলে সব কষ্টের অবসান হয় । ঋতুকালে সবসময়ই অপেক্ষাকৃত ভালবোধ করে (জিঙ্কাম)। অর্শরোগ সাথে স্বল্প ঋতুস্রাব রজোনিবৃত্তি সময়ে অর্শরোগ। যেন আটকে আছে এই অনুভূতি সাথে ছুঁচ ফোটানো ব্যথা যেন উপরদিকে ঠেলে উঠছে (এসিড-নাই)। মুখ বা নাকের কাছে কোন বস্তু থাকলেই শ্বাসপ্রশ্বাসে কষ্ট হয় দূর হতে ও ধীরে ধীরে পাখার বাতাস খেতে চায় (দ্রুত পাখার বাতাস চায় = কার্বভে) । ঘুম আসলেই নিশ্বাস বন্ধ হয়ে আসে এমন-কা, গ্রিন্ডেলিয়া, ল্যাক-ক্যা, ওপি)। দেহ ও মনে অত্যন্ত দুর্বলতা—সর্বাঙ্গে কাঁপুনি, দুর্বলতার জন্য সর্বদা : অবসন্নভাব—এ সব সকালে বেড়ে যায় (সালফ, টিউবার) । মৃগী রোগ — ঘুমের মধ্যে হয় (বিউফো) জৈব পদার্থের অপচয়, হস্তমৈথুন করে, ঈর্ষার কারণে মৃগী হলে ব্যবহার্য। রক্তস্রাব প্রবণতা, অল্প একটু কেটে গেলেও সহজেই প্রচুর পরিমাণে রক্ত বার হতে থাকে (ক্রোটেল, ক্রিয়ো, ফস) কালচে রক্ত ও জমাট বাধে না (ক্রোটেল, সিকেলি)। ফোড়া কার্বাঙ্কল, ঘা এতে ভীষণ যন্ত্রণা (টেরান্টুলা), সাংঘাতিক ফোঁড়া—তাতে পুঁজ হয় । শয্যাক্ষত-ঐগুলো কালচে, নীলাভ । বেগুনী বর্ণ ও সাংঘাতিক হবার প্রবণতা থাকে। বিষাক্ত ঘা ও শব কাটাছেড়া করে অসুখ হলে ব্যবহার্য (পাইরো)। মূত্রথলীতে যেন একটি গোলাকার বস্তু গড়িয়ে গড়িয়ে যাচ্ছে এই অনুভূতি হয় । জ্বর — প্রতি বছর ফিরে ফিরে আসে, প্রতি শরৎকালের কুইনাইন চাপা জ্বর প্রতি বসন্তকালে ফিরে আসে (কার্বভে, সালফ) । জ্বর – টাইফয়েড, টাইফাস জ্বরে নিদ্রাচ্ছন্নভাব, বিড়বিড় করে প্রলাপ বকে, চোখ গাল চুপসে যায়, নিচের চোয়াল ঝুলে পড়ে। জিব শুকিয়ে যায়, কালচে জিব, জিব কাপে-অতিকষ্টে জিভ বার করে-জিব দাতে আটকে যায়, চোখের সাদা অংশ হলদে বা কমলা রঙ হয়ে যায়, ঠান্ডা ঘাম, কাপড়ে হলদে দাগ পড়ে । ঘামের সাথে রক্ত বার হয় (লাইকো)। ডিপথেরিয়া ও টনসিল প্রদাহ-বাঁদিকে শুরু হয়ে ডানদিকে বেড়ে যায় (ল্যাক-ক্যা, স্যাবাডি)—তা ঘন বেগুনি বর্ণ হয়ে যায় (ন্যাজা)। গরম পান করলে ও ঘুমের পর যন্ত্রণা বাড়ে । শক্ত অপেক্ষা তরল গিলতে বেশী কষ্টবোধ হয় । (বেল, ব্রায়ো, ইগ্নে) গলার অবস্থা দেখে যা মনে হয় সেই তুলনায় অবসন্নতা বেশী । সম্বন্ধ – অনুপূরক হিপার, লাইকো, এসি-নাই, শত্রু সম্বন্ধ — এসে-এসিড, কার্ব-এসি । সবিরাম জ্বরের প্রকৃতি পাল্টে গিয়ে ল্যাকেসিসের পর নেট-মি-র প্রয়োজন হয় । বৃদ্ধি — ঘুমের পরে, ছোঁয়া লাগলে, ঠান্ডা বা গরম বেশী হলে, অদ্রব্য, মদ খেলে, চায়না ও পারদের অপব্যবহারে, চাপে বা পিষে গেলে, সূর্যের কিরণে, বসন্তকালে, গ্রীষ্মকালে রোগলক্ষণ বাড়ে । শক্তি – ৩০, ২০০, ০/১ হতে ০/০৩ শক্তি । |