অত্যন্ত সংবেদনশীল ও আত্মমর্যাদার অভাব, রক্ত গরম। |
দৃঢ় ধারণা বা কল্পনার বশীভূত হয়ে ভয়। |
রোগের পার্শ্ব পরিবর্তন করার প্রবনতা। |
সাপের ভয়, কল্পনায় সাপ দেখে, পিঠে সাপ আছে এরকম মনে হয়। |
নাকটা যেন নিজের নয় এরুপ মনে হয়। |
একদিন সকালে আবার পরের দিন বিকালে বৃদ্ধি। |
লবন, কড়া খাদ্য ও গরম পানীয়ের প্রতি আগ্রহ। উপযোগিতা – স্নায়বিক, অস্থির ও অত্যন্ত অনুভূতিসম্পন্ন প্রকৃতির। রোগীতে এ ওষুধ উপযোগী । রোগ লক্ষণ পরিবর্তিত হয় — ব্যথা যন্ত্রণা এক অঙ্গ থেকে অন্য অঙ্গে সরে সরে বেড়ায় (কেলি-বাই, পালস); রোগলক্ষণ কয়েক ঘন্টা বা কয়েকদিন বাদে বাদে একদিক হতে অন্যদিকে সরে বেড়ায় । ভীষণ ভুলোমন, অন্যমনস্ক—দোকানে জিনিষ কিনে দোকানেই ফেলে চলে আসে (এগ্নাস, এ্যানাকার্ডি, কষ্টি, নেট-মি) । লিখতে গেলে অযথা বেশী লেখে, প্রয়োজনীয় কথাটি বাদ পড়ে যায়— লিখতে গেলে শেষ শব্দটি বা অনেক শব্দ বাদ পড়ে যায়—পড়াশোনায় মনোসংযোগ করতে পারে না ভীষণ নার্ভাস (স্নায়ুদৌর্বল্য হেতু) (বোভিষ্টা, গ্র্যাফা, ল্যাকে, নেট-কা, সিপিয়া]। আশাশূন্য, হতাশ-মনে করে তার রোগ সারবে না, মনে করে কোন জীবিত বন্ধু নেই, বেঁচে থাকা অর্থহীন, যে কোন মুহূর্তে কেঁদে ওঠে (এ্যাকটিয়া রেসি, অরামমেট, ক্যাল্কে-কা, ল্যাকে)। শিশুরোগী, খিটখিটে, সব সময়ই চেঁচায় ও কাঁদে বিশেষতঃ রাতের দিকে (জ্যালাপা, নাক্স-ভ, সোরিন)। ভয় — একা থাকতে ভয়, (কেলি-কা), মরে যাবে এই ভয় (আর্স); পাগল হয়ে যাবে এই ভয় (লিলি-টি); সিঁড়ি হতে নীচে পড়ে যাবার ভয় (বোরাক্স)। বহুদিন থেকেই হতাশাগ্রস্ত চারিদিকেই যেন অন্ধকার, এত অন্ধকার যেন আর নেই এতটাই আশা শূন্য (লাইকো, পাল) । সামান্য উত্তেজনায় রেগে যায়, অভিশাপ দিতে থাকে, দিব্যি (শপথ) কাটে (লিলি-টি, এসি-নাই)—অত্যন্ত কুৎসিত আচরণ দেখে ঘৃণা হয় । সর্দি – সাদা, ঘন শ্লেষ্মা বার হয় । সর্দিতে এক নাক বন্ধ অন্যটি হতে শ্লেষ্মাস্রাব হয়—পাল্টাপাল্টি করে এই অবস্থা এক নাক হতে অন্য নাকে হয়—স্রাবে হেজে যায়, নাক ও ঠোঁটে ঘা হয় (অরাম, সিপা) । ডিপথেরিয়া ও টনসিলাইটিস হলে লক্ষণগুলো অবিরত দিক পরিবর্তন করে । গলায় ঘা ও কাশি ঋতুস্রাবের সাথে সাথে শুরু হয় ও কমে যায়—গলায় হলদে ও সাদা রঙের আবরণ পড়ে, ব্যথা কান অবধি ধেয়ে যায় । গলা — বাইরে থেকেও ছোয়া লাগান যায় না (ল্যাকে); শূন্য গলাধঃকরণে ব্যথা বাড়ে (ইগ্নে), বারে বারে ঢোক গিলতে চায়। ঢোক গিলতে কষ্ট হয় প্রায়ই অসম্ভব হয়ে পড়ে (মার্ক); গলার ব্যথা কান অবধি ধেয়ে যায় (হিপার, কেলি-বাই); বাঁদিকে রোগের শুরু (ল্যাকে)। ডিপথেরিয়া রোগে গলায় জমা পর্দা, সিফিলিস হতে ঘা ও অন্যান্য ঘায়ের আকৃতি উজ্জ্বল ও চকচকে। ক্ষিধে খুব বেশী যথেষ্ট খেয়েও তৃপ্তি হয় না, আহারের আগেও যেমন ক্ষুধার্ত, আহারের পরও ততটাই ক্ষুধার্তবোধ (ক্যাস্কা, ক্যাল্কে, সিনা, লাইকো, ষ্টন্সিয়া) । ওপর পেটে খালি খালি বোধ পাকস্থলীতে মূর্চ্ছাবোধ । ঋতুস্রাব – নির্দিষ্ট সময়ের আগে, পরিমাণে প্রচুর-উজ্জ্বল লাল, আঠালো, দড়ির মত, রক্ত দমকে দমকে বার হয় (ঘন, কালচে দড়ির মত = ক্রোকাস) । ঋতুর আগে ও ঐ সময় স্তন দুটো ফোলে, যন্ত্রণা হয়, ছোঁয়া যায় না (কোনি)। যোনিপথে বায়ু বার হয় (ব্রোমি, লাইকো, নাক্স-ভ, স্যাঙ্গুনে) । স্তন – প্রদাহিত, যন্ত্রণা হয়—সামান্য ঝাঁকি লাগলে ও সন্ধ্যার দিকে ব্যথা বাড়ে-সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠতে বা নীচে নামতে গেলে হাত দিয়ে শক্ত করে স্তন দুটো চেপে ধরতে হয় (ব্রায়ো)। স্তনের দুধ শুকিয়ে দিতে যেকোন ক্ষেত্রে এ ওষুধ উপযোগী-(আসাফো) [স্তনের দুধ ফিরিয়ে আনতে বা বাড়িয়ে দিতে = ল্যাক-ডি]। শুয়ে থাকলে মনে হয় যেন শ্বাসবন্ধ হয়ে যাবে—উঠে বসতে বা হেঁটে বেড়াতে বাধ্য হয় (এমন-কা, গ্রিন্ডেলিয়া, ল্যাকে)। কোন নির্দিষ্ট কারণ ছাড়াই স্তন দানের সময় স্তনের দুধ লোপ পেলে এ ওষুধ উপযোগী (আসাফো)। বা কাতে শুলে প্রচন্ড বুক ধড়ফড় করে ডান কাতে ফিরে শুলে বুক ধড় ফড়ানি কমে যায় (ট্যাবাকা)। ছোঁয়া লেগে, বসলে বা হাঁটার সময় জননেন্দ্রিয়ে সামান্য ঘষা লাগলেই কামো উত্তেজনা হয় (সিনামোন, কফি, মিউরেক্স, প্ল্যাটি-না)। হাঁটার সময় মনে হয় বাতাসে ভর দিয়ে হাঁটছে, শুলে মনে হয় দেহ যেন বিছানা ছুঁতে পারছে না (আসারাম)। পিঠে ব্যথা—তীব্র, অসহ্য, স্যাক্লামের ওপরদিকে আড়াআড়িভাবে ডান নিতম্ব ও ডান সায়াটিক নার্ভ অবধি ব্যথা বেড়ে যায়—ঐ ব্যথা বিশ্রামে ও প্রথম সঞ্চালনে বেড়ে যায় (রাস-ট) সম্পূর্ণ মেরুদন্ডে মস্তিষ্ক হতে ককসিক্স অবধি ব্যথা, ছোয়া লাগান বা চাপ দেওয়া যায় না (চিনি-সা, ফস, জিঙ্কাম)। সম্বন্ধ — এপিস, কোনি, মিউরেক্স, ল্যাকে, কেলি-বা, পালস্, সিপিয়া ও সালফ-এর সদৃশ। একমাত্রাতেই ভাল কাজ করে । সম্ভবতঃ মেটেরিয়া মেডিকাতে অন্য কোন ওষুধ নেই যা গলার লক্ষণ সম্বন্ধে এরকম মূল্যবান রোগনির্দেশ করেছে বা ভালভাবে পড়লে এর চেয়েও উৎকৃষ্ট ফল পাওয়া যাবে । ল্যাকেসিস-এর মত এই ওষুধের ব্যবহার কালে কুসংস্কার ও অজ্ঞতার জন্য বাধার সৃষ্টি হয়েছিল, কিন্তু এর অপূর্ব রোগ নিরাময়কারী শক্তি ধীরে ধীরে এই বাধা দূর করেছে। প্রাচীনকালে ডঃ ডায়োস্কোরাইড, প্রিনী সেক্সটাস প্রমুখ । ডাক্তারগণ ব্যবহার করেছেন ও পরে নিউইয়র্ক শহরের ডঃ রেইজিগ এর পূর্ণ ব্যবহার করেন । ডঃ বেয়ার্ড, ডঃ রেইজিগ সর্বপ্রথম এই ওষুধ শক্তিকৃত করেন । শক্তি — ৩০, ২০০ হতে উচ্চশক্তি, ০/১ হতে ০/৩০ শক্তি । |