বমিভাব ও বমি, বমি হলে উপশম অনুভূতি না হয়ে আবার বমি করতে ইচ্ছা হয়, মুখে প্রচুর থুতু বা লালা উঠে। |
বুকে শ্লেষ্মা ঘড়ঘড় করে কিন্তু উঠে না, আক্ষেপিক শ্বাসকষ্ট। |
জিহ্বা পরিষ্কার আথবা লাল, কিন্তু ব্রস্কোনিউমোনিয়ায় প্রচুর ময়লা। |
আহারে অরুচি, পিপাসা থাকে না। |
পেটে বায়ু জন্মে নাভীর চারিদিকে কেটে ফেলার মত ব্যথা, মানসিক অবসাদের সাথে উত্তেজনা। |
টাটকা রক্তস্রাবের সাথে বমিভাব। |
জ্বরে শরীরের বাহিরে শীতঅনুভূতি কিন্তু ভীতরে উত্তাপ অনুভূত হয়। এই ঔষধের মূল কাজ হলে নিউমোগ্যাসট্রিক স্নায়ুর উপর, বুকে ও পাকস্থলীতে আক্ষেপিক উত্তেজনার সৃষ্টি করে। যারা মার্ফিয়া ব্যবহারে অভ্যস্ত। ইপিকাকের প্রধান লক্ষণ হল, একটানা বমিবমিভাব ও বমি, এটিই এই ঔষধের প্রধান পথ প্রদর্শক লক্ষন। দুপাচ্য খাদ্য, কিসমিস, কেক প্রভৃতি খাবার খাওয়ার কুফল। বিশেষ করে মেদবহুলশিশু, ও বয়স্কদের ক্ষেত্রে ভালো কাজ করে, যারা দুর্বল এবং যাদের সহজেই ঠান্ডা লাগে। আক্ষেপিক উপসর্গসমূহ। রক্তস্রাব উজ্বল-লালবর্ণের এবং পরিমানে প্রচুর হয়। মন — খিটখিটে; প্রতিটি বস্তুর প্রতি অবজ্ঞা। বহু কিছু পেতে আগ্রহী, কিন্তু কি পেতে চায় তা তারা নিজেরাই জানে না। মাথা — মাথার খুলির অস্থিতে পিষে যাবার মত অথবা থেঁৎলিয়ে যাবার মত অনুভূতি। বেদনা দাঁত ও জিহ্বার গোড়া পর্যন্ত প্রসারিত হয়। চোখ — প্রদাহিত, লালবর্ণ। চোখের তারার ভিতরে বেদনা। প্রচুর অশ্রুস্রাব। কনীনিকা ঘোলাটে। কাছের বস্তু দেখতে চোখের ক্লান্তি। দৃষ্টিশক্তির অবিরাম পরিবর্তনশীলতা। চোখের পেশীর দুর্বলতা ও আক্ষেপ। চলন্ত বস্তুর দিকে তাকালে বমি বমিভাব। মুখমন্ডল – চোখের চারিপাশে। গোলাকার নীলবর্ণের দাগ। নির্দিষ্ট সময় অন্তর চক্ষুকোটরের স্নায়ুশূল, তৎসহ অশ্রুস্রাব। আলোকাতঙ্ক চোখের পাতায় হুলফোটার মত বেদনা। নাক – সর্দিজ তৎসহ নাক বন্ধ হয়ে থাকে এবং বমিবমিভাব। নাক থেকে রক্তস্রাব। পাকস্থলী – জিহ্বা সাধারণতঃ পরিষ্কার। মুখগহুর ভিজা; প্রচুর লালা। অবিরাম বমিবমিভাব ও বমি, তৎসহ মুখমন্ডল ফ্যাকাশে ও মুখমন্ডলের নর্তন। খাদ্যবস্তু, পিত্ত, রক্ত ও শ্লেষ্মা বমন। পাকস্থলী শিথিল বলে মনে হয়ে, যেন ঝুলে পড়েছে এই জাতীয় অনুভূতি। উদর – অ্যামিবিক আমাশয় তৎসহ কোঁথ; কোঁথ দেবার সময় এত বেশি বেদনা হয় যার ফলে বমিবমিভাব দেখা দেয়; পিপাসা সামান্য কেটে ফেলার মত, পোষন করার মত বেদনা; নাভির চারিপাশে বেশি হয়। শরীর আড়ষ্ট; যেন টানটান হয়ে রয়েছে, এই জাতীয় আড়ষ্টতা। মল – পিচের মত কালো, ঘাসের মত সবুজ, ফেনাযুক্ত ঝোলা গুড়ের মত, তৎসহ নাভির চারিপাশে মোচড়ানি, আমাশয়, মল পিচ্ছিল। স্ত্রীরোগ — জরায়ুর থেকে রক্তস্রাব, প্রচুর, উজ্বললাল, গলগল করে বেরিয়ে থাকে তৎসহ বমিবমিভাব। গর্ভাবস্থায় বমি। নাভি থেকে জরায়ু পর্যন্ত বেদনা। মাসিক ঋতুস্রাব নির্দিষ্ট সময়ের অনেক আগে ও পরিমানে প্রচুর। শ্বাস-প্রশ্বাস যন্ত্রসমূহ – শ্বাসকষ্ট, অবিরাম বুকের ভিতরে সঙ্কোচন বং অনুভূতি। হাঁপানি। বাৎসরিক রোগাক্রমণ, কষ্টকর ছোট-ছোট শ্বাস-প্রশ্বাস। অবিরাম হাঁচি, সর্দি, সাঁই সাঁই শব্দ সহ কাশি, অবিরাম এবং তীব্র কাশি, প্রতিবার শ্বাস-প্রশ্বাস নেবার সময় কাশি। বুকের সর্দিতে পূর্ণ কিন্তু কাশির তা উঠে না। বায়ুনলীতে বুদবুদের মত শব্দ। শ্বাসরোধক কাশি; শিশু কাশির ধমকে শক্ত হয়ে যায় এবং মুখমন্ডল নীলবর্ণ। হুপিং কাশি, তৎসহনাক থেকে রক্তস্রাব, এবং মুখ দিয়ে রক্ত উঠে। ফুসফুস থেকে রক্তস্রাব তৎসহ বমিবমিভাব; বুকের ভিতরে সঙ্কোচনের মত অনুভূতি; ঘড়ঘড়ে কাশি। ঘূংড়ি কাশি। সামান্য পরিশ্রমে ফুসফুস থেকে রক্তউঠে (মিলিফোলিয়াম)। স্বরভঙ্গ, বিশেষতঃ ঠান্ডা লাগার শেষভাগে, সম্পূর্ণ স্বরলোপ। জ্বর – সবিরাম জ্বর, অনিয়মিতভাবে রোগলক্ষনের প্রকাশ, কুইনাইন ব্যবহারের পরে। সামান্য শীতবোধ তৎসহ প্রচুর গাত্রতাপ। বমিবমিভাব, বমি, ও শ্বাসকষ্ট। অনুপযুক্ত খাদ্য খাবার পরে রোগের পুনরাক্রমন দেখা দেয়। ঘুম – চোখগুলি অর্ধেকটা খুলে রেখে ঘুমায় ঘুমাতে যাবার সময় সমগ্র অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে আঘাত লাগার মত অবস্থা (ইগ্নেশিয়া)। অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ – শরীরে আড়ষ্টের মত টান-টান, এর পরে বাহুদুটি একটি অপরটির দিকে আক্ষেপিক ঝাঁকুনি দিয়ে থাকে। চামড়া — ফ্যাকাশে, শিথিল। চোখের চারিপাশে নীলবর্ণের গোলাকার দাগ। ঘামাচির মত উদ্ভেদ। কমা-বাড়া-বৃদ্ধি – নির্দিষ্টসময় অন্তর; আর্দ্র উষ্ণবাতাস, শুয়ে থাকলে; বাছুরের মাংসে। সম্বন্ধ — তুলনীয় : এমিটিন- ইপিকাকের প্রধান উপক্ষার। (একটি শক্তিশালী অ্যামিকা ধবংসকারক, কিন্তু এটি ব্যাকট্রিয়া ধবংসকারক নয়। নির্দিষ্টভাবে এই ঔষধটি আমিবিয়্যাসিসের ক্ষেত্রে ব্যবহার হয়; অ্যামিবিক আমাশয়ে এই ঔষধের কাজ উল্লেখ করার মত; এছাড়াও এটি পাইয়েরিয়ায় কাজ করে, গ্রেন মাত্রায় দৈনিক একবার পর পর তিনদিন; এর পরে পরিমান কমিয়ে দিতে হবে। সোরিয়াসিসের ক্ষেত্রে এমিটিন গ্রেন মাত্রায় চামড়ার নীচে ইজেকশন করা হবে। এমিটিন হাইড্রো ২xবিচূর্ণ, উদরাময় তৎসহ উদরের শূলবেদনা এবং বমি-বমিভাবের ক্ষেত্রে। এমিটিন বহুব্যাপক অ্যামিবিক আমাশয়ের ক্ষেত্রে। বস্তুগত মাত্রায় ব্যবহার করার সময়ে খুবই সতর্ক থাকা প্রয়োজন, কারন ঔষধটি ফুসফুসের, যকৃৎ জাতীয় পরিবর্তন, উৎপন্ন করতে পারে, হৃদপিন্ডের ক্রিয়া দ্রুততর করে, মাথা সামনের দিকে ঝুঁকে পড়ে ও লেবার নিউমোনিয়া উৎপন্ন করে)। রক্তবমন এবং অন্যান্য প্রকারের রক্তস্রাবে, তুলনীয়ঃ জিল্যাটীন (রক্ত তঞ্চনের উপর এই ঔষধের সুস্পষ্ট কাজ আছে। চামড়ার নীচে ইনজেকশন রূপে, অথবা মুখে, ১০ জেলি, ৪ আউন্ট পরিসুত জলে দিনে তিনবার।) আর্সেনিক, ক্যামোমিলা, পালসেটিলা; টাটার এমোটিক; স্কুইল; কনকন কিউলাস (শূলবেদনা এবং উদরাময়)। টাইফা ল্যাটিফোলিয়া (আমাশয় ও উদরাময়) এবং গ্রীষ্মকালীন উপসর্গসমূহ। ইউফর্বিয়া হাইপোরিসিফোলিয়া – গার্ডেন স্পার্জ-(ইপিকাকের সঙ্গে সদৃশ। শ্বাসপ্রশ্বাস যন্ত্রসমূহ ও পাকাশয়িক যন্ত্রসমূহ এবং স্ত্রী যৌনাঙ্গের উত্তেজনা)। লিপ্পিয়া মেক্সিক্যানা — (একাদিক্রমে শুষ্ক, শক্ত, কাশি- হাঁপানি এবং পুরাতন ব্রঙ্কাইটিস)। হাঁপানীতে তুলনীয় ও ব্ল্যাটা ওরিয়েন্টালিস। দোষঘ্ন — আর্সেনিক, চায়না; ট্যাবেকাম। পরিপূরক — কিউপ্রাম; আর্নিকা। শক্তি – ৩য় থেকে ২০০ শক্তি। |